প্রেমিককে পেতে বাবা-মা, দুই মেয়েকে ধীরে ধীরে হত্যা!

Looks like you've blocked notifications!
বাবা-মা ও দুই শিশু মেয়েকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার অভিযোগে আটক সৌম্যা। ছবি : সংগৃহীত

গত জানুয়ারি মাসে মারা যায় ছয় বছর বয়সী শিশু ঈশ্বরা। মার্চে মারা যায় ঈশ্বরার নানি ভি কে কমলা। এপ্রিলে মারা যায় ঈশ্বরার নানা পি কে কুঞ্জিকান্নান। তাঁরা প্রত্যেকেই মারা যায় বমি ও পেটের অসুখে। এর আগে ২০১৩ সালে বমি ও পেটের অসুখ নিয়ে মারা যায় ঈশ্বরার আরেক বোন কীর্তনা। তখন কীর্তনার বয়স ছিল মাত্র এক বছর।

ভারতের কেরালায় এ ঘটনা ঘটে। একই পরিবারের এত সদস্য একই সমস্যা নিয়ে মারা গেলে প্রতিবেশীরা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। ঈশ্বরার মা সৌম্যাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশেরও সন্দেহ হলে সৌম্যাকে আটক করা হয় গত মঙ্গলবার। দীর্ঘ আট ঘণ্টা জেরা করার পর সৌম্যা জানান, ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করে নিজের দুই সন্তান, বাবা ও মাকে হত্যা করেন তিনি!

কবর খুঁড়ে তুলে আনা হয় সৌম্যার স্বজনদের লাশ। তাঁদের অন্ত্রে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড পাওয়া যায়। ইঁদুর মারার জন্য ওই পদার্থ ব্যবহার করা হয়!

স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর দুই মেয়ে, বাবা ও মাকে নিয়ে থাকতেন সৌম্যা। অভিযোগ উঠেছে, এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সৌম্যা। এরপরই ধীরে ধীরে নিজের স্বজনদের খাবারে বিষাক্ত দ্রব্য মেশাতে থাকেন তিনি।

কেউ যেন সন্দেহ না করে এজন্য নিজেও বমি ও পেটের অসুখের ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে আটকের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বজনদের খাবারে বিষাক্ত দ্রব্য মেশানোর কথা স্বীকার করেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে প্রথম মারা যায় সৌম্যার এক বছরের মেয়ে কীর্তনা। তারপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মারা যায় সৌম্যার ছয় বছরের মেয়ে ঈশ্বরা। গত ৭ মার্চ মারা যায় সৌম্যার মা ভি কে কমলা। গত ১৩ এপ্রিল মারা যায় সৌম্যার বাবা পি কে কুঞ্জিকান্নান।

প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। ওই পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য সৌম্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আট ঘণ্টা জেরা করার পর নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেন সৌম্যা।

পুলিশ আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে মাটি থেকে কবর খুঁড়ে সৌম্যার স্বজনদের মৃতদেহ তুলে আনে। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, মৃতদেহের অন্ত্রে অধিক পরিমাণে অ্যালুনিয়াম ফসফাইড আছে।

সৌম্যা জানান, প্রেমিকের সঙ্গে নতুন করে জীবন শুরু করার ইচ্ছাতেই অল্প অল্প করে বিষাক্ত দ্রব্য প্রয়োগ করে নিজের দুই মেয়ে ও মা-বাবাকে হত্যা করেন তিনি। প্রথম ২০১৩ সালে ছোট মেয়ে কীর্তনাকে অল্প অল্প মাত্রায় বিষ প্রয়োগ করে খুন করার পর সাহস পেয়ে যান তিনি। এরপর প্রেমিকের সঙ্গে সৌম্যার অন্তরঙ্গ মুহূর্ত বড় মেয়ে ঈশ্বরা দেখে ফেলে। বিষয়টি ঈশ্বরা তার নানা ও নানিকে জানায়। এরপরই খাবারে বিষাক্ত দ্রব্য মেশানো বাড়িয়ে দেন সৌম্যা।

অভিযুক্ত সৌম্যাকে স্থানীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক তার চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।