ভারতে আদিবাসী সংগঠনের ‘বনধে’ বিপর্যস্ত রেল ও সড়ক

Looks like you've blocked notifications!
একাধিক আদিবাসী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রেল চলাচল বন্ধ করে দেয়। ছবি : সংগৃহীত

ভারতে আদিবাসীদের ‘সারণা ধর্ম’কে সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা, সাঁওতালি ভাষাকে রাষ্ট্রীয় মান্যতা দেওয়া, দেশের প্রতিটি এলাকায় সাঁওতালি ভাষায় পঠন পাঠনের ব্যবস্থা করাসহ মোট ১০ দফা দাবিতে ‘বনধ’ পালন করেছে দেশটির একাধিক আদিবাসী সংগঠন।

আজ সোমবার ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দ্য়ে এসব সংগঠন। এই বনধের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ভারতের একাধিক রাজ্যের রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে এই বনধের জেরে পশ্চিমবঙ্গের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই ভারত বনধে অংশ নেয় ভারতের আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান, ঝাড়খণ্ড দেশম পার্টিসহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রায় ছয়টি সংগঠন। এই বনধের জেরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, আসামসহ একাধিক রাজ্যের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় রেল চলাচল। সড়ক পথেও পড়েছে ব্যাপক প্রভাব। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নানা স্টেশনে আটকে পড়েছে শতাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। বাতিল করা হয়েছে ৩০টির ওপর লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন।

আদিবাসী সংগঠনের ভারত বনধের প্রভাবে রেল অবরোধ শুরু হয় এদিন সকাল থেকেই। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার কানকি স্টেশন, পুরুলিয়ার কাটাবি, ইন্দ্রবিল, মধুকুণ্ডা, শ্রীরামপুর স্টেশনে সকাল ৬টা থেকেই অবরোধে বসে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। পূর্ব বর্ধমানের জোগ্রাম স্টেশনেও চলছে অবরোধ। বিভিন্ন স্টেশনে আদিবাসীরা তীর ধনুক নিয়ে রেল লাইনে বসে রেল অবরোধ করেছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, সারণা ধর্মকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দিলে তারা আন্দোলনে প্রাণ দিতেও প্রস্তুত। আদিবাসীদের আন্দোলনের জেরে থমকে যায় আসাম-বাংলা রেল যোগাযোগ।

রেলের পাশাপাশি সড়ক পথেও পড়েছে এই ভারত বনধের প্রভাব। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন রাজ্যে যাওয়ার অন্যতম সড়কপথ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থমকে যায়। জাতীয় সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।

ভারতের তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং পিছিয়েপড়া সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ নজরসহ কেন্দ্রের কাছে ১০ দফা দাবি ও রাজ্যের সহানুভূতি আদায়ের লক্ষ্যে এই ভারত বনধে শামিল হয়েছে আন্দোলনকারীরা। তবে এদিনের ভারত বনধে একমাত্র ছাড় দেওয়া হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স, পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।

ভারতের আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের রাজ্য সভাপতি সুখলাল সোরেন জানান, অতীতেও এই দাবিতে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। কিন্ত সরকার কথা শোনেনি। তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই অবহেলার শিকার। তাই এদিনের আন্দোলনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’