সৌদি বাদশার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পুরো হোটেল ভাড়া

Looks like you've blocked notifications!
যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে ওয়াশিংটন ডিসিতে পুরো একটি হোটেল ভাড়া করে ছিলেন সৌদি বাদশাহ। মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তু সংকটে সৌদি রাজপরিবারের এমন বিলাসিতা এরই মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ছবি : রয়টার্স

জ্বালানি তেলের দাম নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। তেলের পূর্বের রেকর্ড পরিমাণ সর্বোচ্চ মূল্যের তিন ভাগের একভাগ হলো বর্তমান দাম। তবে তেলকূপের মালিক মধ্যপ্রাচ্যের শেখদের বিলাসিতা একচুলও কমেনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট ভ্রমণে এসে পুরো একটি হোটেল ভাড়া করে এমনই এক বিলাসিতা দেখালেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। 

যুক্তরাষ্ট্রের ‘পলিটিকো’ সাময়িকীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন এলাকার ২২২টি কক্ষের ফোর সিজন হোটেল পুরোটাই সৌদি বাদশাহর জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়স্ক বাদশাহ শনিবার পর্যন্ত ওই হোটেলে ছিলেন। ওই হোটেলে আরো ছিলেন সৌদি রাজপরিবারের সদস্য, সৌদি কূটনীতিক ও কর্মচারীরা। আর বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত হোটেলে থাকার জন্য আগে থেকে যারা বুকিং করেছিলেন, তাঁরা শহরের অন্য হোটেলে চলে যান।  

সৌদি বাদশার আগমনের আগে ফোর সিজন হোটেলকে নতুন করে সাজানো হয়। হলওয়েতে বসানো হয় লাল রঙের নতুন কার্পেট। এ ছাড়া হোটেলে আনা হয় স্বর্ণখচিত আসবাব, যার মধ্যে ছিল আয়না, টেবিল ও বাতি। 

ফোর সিজন হোটেলে প্রতি রাতে ৫০০ থেকে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যয় হয়। হোটেলের প্রেসিডেনসিয়াল স্যুটের ভাড়া এর চেয়ে বেশি। পুরো হোটেলের ভাড়া হোটেলের তালিকাতেই নেই।

বিলাসিতার কারণে খবরের শিরোনাম হওয়া সৌদি আরবের রাজপরিবারের জন্য এই প্রথম নয়। গত মাসে সৌদি রাজার অবসর কাটানো উপলক্ষে ‘ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা’-এর একটি সৈকত খালি করে দেওয়া হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বাদশাহের বিমান অবতরণের স্থানে সারিবদ্ধ ছিল কয়েক ডজন লিমো।

সৌদি বাদশাহর তাকলাগানো বিলাসিতায় মার্কিনিদের কোনো বিকার নেই। কারণ সৌদি রাজপরিবারের খরচে চাঙ্গা হয়ে ওঠে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউনের অর্থনীতি। 

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সংকটের মধ্যে সৌদি বাদশাহর এমন বিলাসিতা প্রদর্শন এরই মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তু সংকটে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সৌদি আরবসহ তেলসমৃদ্ধ ছয় দেশ। অপর দেশগুলো হলো কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইন। এর সব কটি দেশের নীতিই যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা। 

ধারণা করা হয়, চলতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র কেনার ফরমায়েশ দিয়েছে সৌদি আরব। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকেও বেশ চাঙ্গা করবে এবং দেশটিতে নতুন কর্মস্থলও তৈরি করবে।