‘ওয়েলকাম টু আমেরিকা’
একটি শিশু ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তাকিয়ে আছে ব্যক্তিটির দিকে। শিশুটি কাঁদছে। সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তিটি অনেক লম্বা। তাঁর ক্ষমতাও অনেক। স্যুট পরা ভদ্রলোকটির নাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
এমনই একটি ছবির পাশে লেখা ‘ওয়েলকাম টু আমেরিকা’।
বিশ্বের প্রখ্যাত ও প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ‘টাইম’ নিজেদের প্রচ্ছদ এভাবেই করেছে। আগামী জুলাই সংখ্যার প্রচ্ছদে এই ছবি দেখা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক শিশুদের তাদের বাবা ও মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখার উদ্যোগ নেয় দেশটির প্রশাসন। আর বাবা ও মায়েদের কারাগারে পাঠানোর কথা বলা হয়। আলাদা করা শিশুদের কান্নাসহ বিভিন্ন হৃদয়বিদারক ছবি প্রকাশ হতে থাকে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প।
ফটোসাংবাদিক জন মুরের সেই ছবিটি। ছবি : টাইম
ঠিক এ আবহটাই নিজেদের প্রচ্ছদে নিয়ে আসে টাইম। ছবিটি সম্পাদনা করা। সীমান্তে কান্নারত একটি শিশুর ছবি ট্রাম্পের ছবির সামনে রেখে মেলানো হয়।
প্রচ্ছদটি কীভাবে হলো তা নিজেদের অনলাইন সংস্করণে জানিয়েছে টাইম।
শিশুর ছবিটি তুলেছেন পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী ফটো সাংবাদিক জন মুর। তিনি কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ছবি তুলছেন। চলতি সপ্তাহে একটি ছবি পুরো বিতর্কটি উসকে দেয়।
ছবিটিতে দেখা যায়, ছোট একটি মেয়ে কাঁদছে। তার গায়ে লাল জামা। পাশে একটি গাড়ির চাকা দেখা যাচ্ছে। আর দুজন মানুষের পা দেখা যাচ্ছে। জন মুর জানান, শিশুটির মাকে নিয়ে গেছে পুলিশ। এরপর থেকেই ও কাঁদছে, মাকে খুঁজছে।
জন মুর জানান, শিশুটির বয়স মাত্র দুই বছর। ও হন্ডুরাসের বাসিন্দা। শিশুটির বাবা ও মাকে নিয়ে যায় পুলিশ।
শিশুটির কান্নার ছবি তোলার কথা বলতে গিয়ে মুর বলেন, ‘আমার জন্য খুব কঠিন সময় ছিল সেটা।’
টাইম জানায়, এমন একটা ছবি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যে নীতির কারণে পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে শিশুরা। বিষয়টি তুলে ধরার জন্যই এমন একটি প্রচ্ছদ তৈরির কথা ভাবে ম্যাগাজিনটি। আগামী ২ জুলাই ওই সংখ্যাটি বাজারে আসবে বলে জানা যায়।
তবে গতকাল বুধবার বন্দি অনুপ্রবেশকারী ও তাদের শিশুদের আলাদা করার নীতি থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। প্রবল জনমতের কাছে নত হয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের আলাদা করার দৃশ্য তাঁর মনে দাগ কেটেছে।’