আয়লানের স্মরণে অস্ট্রেলিয়ায় আলোর মিছিল
তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে ভেসে আসা সিরিয়ার তিন বছরের শিশু আয়লান কুর্দির স্মরণে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে আলোক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে মেলবোর্নের ট্রেজারি গার্ডেন পার্কে কয়েক হাজার অস্ট্রেলীয় জড়ো হন। মোমবাতি জ্বালিয়ে তাঁরা নিহত আয়লানকে স্মরণের পাশাপাশি সিরিয়ার শরণার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন। শুধু মেলবোর্নেই নয়, অস্ট্রেলিয়ার অনেক শহরেই এমন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হেরাল্ড সানের প্রতিবেদনে বলা হয়, আট হাজারের বেশি অস্ট্রেলীয় মেলবোর্নের ট্রেজারি গার্ডেনে জড়ো হয়। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরে অনুষ্ঠিত প্রায় একই ধরনের সমাবেশে হাজারো মানুষ অংশ নেয়।
ট্রেজারি গার্ডেনে জড়ো হওয়াদের অনেকের হাতে ছিল তুরস্কের সৈকতে পড়ে থাকা শিশু আয়লানের নিথর দেহের ছবি। ওই ছবিই গত সপ্তাহে সারা বিশ্বকে থমকে দেয়। আবার অনেকের হাতে থাকা প্লাকার্ডে লেখা ছিল, ‘সিরিয়ার শরণার্থীরা অস্ট্রেলিয়ায় স্বাগত’। অনেকের প্লাকার্ডে লেখা ছিল, ‘হৃদয়ে স্থান আছে, তেমনি আছে ঘরে’। আয়লানের বাবা আবদুল্লাহর কথা ‘এটিই যেন শেষ ঘটনা হয়’ –একেই স্লোগান করা হয় মেলবোর্নের সমাবেশে।
মেলবোর্নে শোভাযাত্রার আয়োজকরা বলেন, এর মাধ্যমে তারা শরণার্থীদের জানাতে চান অস্ট্রেলিয়ায় তাদের গ্রহণ করা হবে। তাঁরা আরো বলেন, শরণার্থীদের জন্য সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে আমরা একাত্ম হতে চাই। আমাদের মতো দেশের কাছে শরণার্থীরা নিরাপত্তা চায়।
আয়োজকরা আরো বলেন, শোভাযাত্রায় সিরীয় শরণার্থী গ্রহণে দেশের নীতির প্রতিও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
তুরস্ক থেকে নৌকায় গ্রিসের কস দ্বীপ যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় তিন বছরের শিশু আয়লানের। ওই নৌকায় থাকা ১১ জন নিহত হয় যাঁর মধ্যে ছিল আয়লানের মা ও পাঁচ বছরের ভাই গালিপ কুর্দি। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার হন আয়লানের বাবা আবদুল্লাহ। হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ই জানতে পারেন পরিবারের সব সদস্যের মৃত্যুর খবর।
তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহের ছবি গত সপ্তাহে বিশ্বের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে ছাপে। একে মানবতার বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। অনেকের মতে, ইউরোপের সিরিয়ার শরণার্থী সংকট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়।