পিটার ডাটনের বিতর্কিত মন্তব্যে অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতাবৃদ্ধিতে ঝুঁকির মুখে থাকা প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলো নিয়ে কৌতুক করে এখন তোপের মুখে আছেন পিটার ডাটন। ছবি : টুইটার থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসনমন্ত্রী পিটার ডাটনের জন্য চলতি সপ্তাহটি জীবনের স্মরণীয় অধ্যায় হতে পারত। জেনেভা সফরে গিয়ে সিরিয়ার ১২ হাজার শরণার্থীর অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে এই উল্লেখযোগ্য অর্জন ম্লান হয়ে গেছে এক কৌতুকে। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতাবৃদ্ধিতে ঝুঁকির মুখে থাকা প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলো নিয়ে কৌতুক করে এখন তোপের মুখে আছেন পিটার ডাটন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবটের সমর্থন পেলেও স্বভাবতইসপ্তাহটি এখন ভুলে যেতেই চাইবেন তিনি। 

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাজধানী ক্যানবেরার একটি আলোচনায় দেরি হচ্ছিল। তখন টনি অ্যাবটকে উদ্দেশ করে পিটার ডাটন বলেন, এটি ‘কেপ ইয়র্ক টাইম’-এ চলছে। ‘কেপ ইয়র্ক টাইম’ বলতে বুঝানো হয়, আদিবাসীদের অলস ও কোনো কাজই পারে না। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ঝুঁকির মুখে থাকা প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট দ্বীপগুলো নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, পানি যখন দরজার কাছে আসবে তখন সময় কোনো ব্যাপারই নয়। প্রধানমন্ত্রী ও অভিবাসনমন্ত্রীর এমন কথোপকথন অনানুষ্ঠানিক হলেও তা টেলিভিশন ক্যামেরায় ধরা পড়ে। 

পিটার ডাটনের উল্লিখিত মন্তব্য অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এবং প্রশান্তমহাসাগরের দ্বীপগুলোর নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। 

পিটার ডাটনকে নির্দেশ করে প্রশান্ত মহাসগারের ছোট দ্বীপরাষ্ট্র কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট আনোট টং বলেন, শীর্ষ নেতারা যত দিন এমন নাকউঁচু মনোভাব নিয়ে থাকবেন তত দিন সমস্যা রয়েই যাবে। বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক যে, অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে শীর্ষ নেতারা কৌতুক করছেন। 

অস্ট্রেলিয়ার কেপ ইয়র্কের ব্যবসায়ী ও আদিবাসী নেতা গেরহার্ডত পিয়ারসন বলেন, প্রতিনিয়ত আদিবাসী জনগোষ্ঠী পিটার ডাটনের মতো একপেশে দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়। আর সরকারের নীতিতেও বিষয়টি দেখা যায়। 

টনি অ্যাবট সরকারের বিরোধীরা এরই মধ্যে পিটার ডাটনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা বিল শর্টেন গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়ে ডাটনের মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য দাবি করে তাঁর পদত্যাগ চেয়েছেন। 

আদিবাসী ও প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট দ্বীপগুলোর নেতাদের ক্ষোভ সত্ত্বেও নিজের মন্ত্রীকেই সমর্থন দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট। আজ শনিবার ন্যাশনাল ফেডারেল কাউন্সিলের এক ভাষণে তিনি অভিবাসন পিটার ডাটনের  প্রশংসা করে বলেন, ১২ হাজার সিরীয় শরণার্থীকে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন জীবন দানের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের সমস্যা সমাধানে অস্ট্রেলিয়া শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। চলতি সপ্তাহে মনে রাখার মতো ঘটনা হলো, পিটার ডাটন ১২ হাজার সিরীয় শরণার্থীকে নতুন জীবন দিচ্ছেন। অন্য সবকিছুই এই অর্জনের কাছে ম্লান। 

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড জানায়, পিটার ডাটনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তিনি দাবি করেন, ওই কথোপকথন ছিল একান্ত ব্যক্তিগত।