ম্যালকম টার্নবুল অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী
অস্ট্রেলিয়ায় পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। আজ সোমবার সন্ধ্যায় দেশটির ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টির মধ্যে এক ভোটাভুটিতে তিনি দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই দেশটির ২৯তম প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ম্যালকম টার্নবুল। একই সময়ে দলের ভোটাভুটিতে দলের ডেপুটি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ।
সিডনি মনিং হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন লিবারেল দলের ৯৮টি ভোটের মধ্যে ম্যালকম টার্নবুল পেয়েছেন ৫৪টি। অপরদিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট পেয়েছেন ৪৪। আর ডেপুটি নেতার পদের জন্য ১০০টি ভোটের মধ্যে জুলি বিশপ পেয়েছেন ৭০। একই পদপ্রার্থী কেভিন অ্যান্ড্রুজ পেয়েছেন মাত্র ৩০ ভোট।
গত কয়েকদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন লিবারেল দলের মধ্যে নেতৃত্বের টানাপড়েন চলছিল। পার্থের ক্যানিংয়ে পুনর্নির্বাচনের আগমুহূর্তে গতকাল রোবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় ওই এলাকায় সরকারবিরোধী মনোভাব প্রকট দেখা যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিজ দলের মধ্যে টনি অ্যাবটের প্রতি বিরোধিতা শুরু হয়। দলের ভাবমূর্তি বাড়াতে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার, বিশেষত টার্নবুলকে প্রধানমন্ত্রিত্ব দেওয়ার দাবি ওঠে দলের মধ্যেই। এমন অবস্থায় ম্যালকম টার্নবুল আজ বিকেলে ক্যানবেরায় অ্যাবটের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
বিকেলের ভাষণে টনি অ্যাবটের রাজনীতিকে কটাক্ষ করে ম্যালকম টার্নবুল বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া নেতৃত্ব দায়, স্লোগান নয়।’ তিনি দাবি করেন, দেশের অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা টনি অ্যাবটের নেই। টার্নবুলের কাছে সবচেয়ে বড় যুক্তি ছিল অ্যাবটের সময় দলটির কয়েকটি আসন হারানো।
দীর্ঘদিন ধরেই ম্যালকম টার্নবুল টনি অ্যাবটের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। টনি অ্যাবটকে বলা বলা হয় এই দশকের অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী। এই কথা তুলেই দলের সভায় টার্নবুল বহুবার অ্যাবটের সমালোচনা করেছেন। অপরদিকে ৬০ বছর বয়সী ম্যালকম বেশ উদার বলা চলে। তিনি সমলিঙ্গের বিয়ের সমর্থক। আর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ছায়াতল ছেড়ে একজন প্রেসিডেন্টে বানিয়ে তাকেই অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতার করার পক্ষে টার্নবুল। একই সঙ্গে পরিবেশদূষণের জন্য দায়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানার পক্ষে তিনি। ২০০৯ সালে বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় দলের মধ্যে এক ভোটে হেরে যান টার্নবুল। তিনি মনে করেন, দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জরিমানা করার প্রস্তাবের কারণেই তিনি হেরে যান। তবে নিজের প্রচেষ্টার ধনী হওয়া ম্যালকম টার্নবুলকে অনেকের কাছেই ‘অহংকারী ও দাম্ভিক’ হিসেবেও পরিচিত।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ম্যালকম টার্নবুল অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রিসভায় বড় পরিবর্তন আনতে পারেন। এতদিন টনি অ্যাবটের নেতৃত্বে থাকা সামনের বেঞ্চের অনেকের পদ থেকে সরে যেতে পারেন। তবে অনেকেই আবার স্বপদেই থাকতে পারেন।