চীনে গণহারে উইঘুর মুসলিম আটকে জাতিসংঘের উদ্বেগ

Looks like you've blocked notifications!

চীনে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসের আশঙ্কায়’ গণহারে উইঘুর মুসলিমদের আটকে রাখার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের পশ্চিমাংশে সংশোধন ক্যাম্পগুলোতে ১০ লাখের মতো উইঘুর মুসলিমকে আটকে রাখা হয়েছে এমন তথ্য পাওয়ার পর জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি এ উদ্বেগ প্রকাশ করল।

বেইজিং এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে, তবে ধর্মীয় কিছু উগ্রবাদীকে সংশোধন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে বলে তারা স্বীকার করেছে। জিনজিয়াং প্রদেশে অস্থিতিশীলতার জন্য চীন ইসলামী বিদ্রোহীদের দায়ী করে আসছে। সরকারের বিভিন্ন অভিযানের ফলে জিনজিয়াং প্রদেশে নিরবচ্ছিন্ন সহিংসতার পরিস্থিতি বিরাজমান।  

এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘের জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণ কমিটি জানায়, উইঘুর মুসলিমদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বেইজিং বেশ কিছু কারাগারে গণহারে উইঘুরদের আটকে রাখছে, এ ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আছে। কিন্তু বেইজিং ১০ লাখ উইঘুরকে আটকে রাখার কথা অস্বীকার করে।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনের আইনে সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের অস্পষ্ট সংজ্ঞার সমালোচনা করে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের কমিটি বেইজিংয়ের প্রতি বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়।

সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া কাউকে আটক, বিচার ও দণ্ড দেওয়ার অবস্থান থেকে সরে এসে অবিলম্বে আটক উইঘুর মুসলিমদের মুক্তি দেওয়া ও ঠিক কতজন উইঘুরে কেন আটক রাখা হয়েছে, তার যথার্থ কারণ জানানোর আহ্বান জানায়। এ ছাড়া জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগগুলোকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানায় কমিটি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা জাতিসংঘের কাছে দাখিল করা প্রতিবেদনে চীনে গণহারে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের আটকের দাবি করে। বন্দি ক্যাম্পগুলোতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি অন্যায়ভাবে আনুগত্য প্রদর্শনের ব্যাপারে বল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করে তারা।

উইঘুরদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘দ্য ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস’ জানায়, ক্যাম্পগুলোতে কোনো কারণ ছাড়াই আটক করা উইঘুরদের জোরপূর্বক কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান দিতে বলা হচ্ছে। বন্দিদের প্রায় অনাহারে রাখা হচ্ছে এবং নির্যাতন চালান হচ্ছে বলেও দাবি করে তারা।

এর মধ্যে চীনের উত্তর-পশ্চিম নিংজিয়া অঞ্চলে শত শত মুসলিম তাদের প্রার্থনালয় মসজিদ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান নেয়। চীনের দূর-পশ্চিমের প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে এক কোটি ৫০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমের বাস বলে জানা যায়। তারা ওই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ। চীনের দক্ষিণের তিব্বত অঞ্চলের মতো জিনজিয়াংও স্বায়ত্তশাসিত এলাকা।