যশোর রোডের গাছ কাটা পড়ছেই

Looks like you've blocked notifications!
ভারতীয় সীমানায় যশোর রোডের শতবর্ষী ৩৫৬টি গাছ কাটার পক্ষে রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম সড়ক পথ যশোর রোডের ভারতীয় অংশের ৩৫৬টি গাছ কাটার পক্ষে রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। গতকাল শুক্রবার প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ এই রায় জানান।

শতাব্দী প্রাচীন এই গাছগুলোকে রক্ষা করতে প্রায় দেড় বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং পরিবেশকর্মীরা। কিন্তু সব আন্দোলনের পর আদালত এই রায় জানান।

তবে, রায় জানালেও আগামী তিন সপ্তাহ গাছ না কাটতেও আদালত নির্দেশ জানিয়েছেন। এমনকি, একটি গাছের বদলে পাঁচটি গাছ লাগানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

মামলার শুনানিতে যশোর রোডের সম্প্রসারণ ও রেলওভার ব্রিজ নির্মাণের জন্য এই ৩৫৬টি গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানান আইনজীবী নীলোৎপল চট্টোপাধ্যায়।

আবেদনে বলা হয়, যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজ থমকে থাকার কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া যশোর রোডে দিন দিন যানজট বাড়ছে, যা থেকে মুক্তি পেতে ওভারব্রিজ নির্মাণ যশোর রোডে অত্যন্ত প্রয়োজন।

তবে, এই আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের আইনজীবীরা। তাঁরা যশোর রোডের ধারে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহাসিক গাছগুলোর গুরুত্ব আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং গাছগুলো সংরক্ষণ করে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি জানান।

শেষে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানান, যশোর রোডের সম্প্রসারণ ও পরিবেশ রক্ষা দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই, যশোর রোডের ভারতীয় সীমান্তের বনগাঁ পেট্রাপোল থেকে বারাসত পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার রাস্তায় পাঁচটি ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য ৩৫৬টি গাছ কাটার অনুমতি দেন আদালত। একইসঙ্গে, একটি গাছ কাটার বদলে পাঁচটি গাছ লাগানোর শর্ত দেন তাঁরা। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করা যাবে।

এই রায়ের পর মামলাকারী সংগঠনের অন্যতম সদস্য মানবাধিকারকর্মী দেবাশীষ রায় চৌধুরী ও বাপ্পা ভুইয়া বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে তাঁরা আশাহত। তবে, লড়াইয়ের মঞ্চ ছেড়ে যাবেন না তাঁরা। গাছের মৃত্যু রুখতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন আইনজীবীরা।

তবে, রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন কি না, তা পরবর্তী সময়ের বৈঠক করে ঠিক করা হবে বলে জানান আইনজীবীরা।