বিদেশে চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ যান

Looks like you've blocked notifications!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকেলে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি : ফোকাস বাংলা

বিদেশে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার আগে সঠিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে চান, তাদের প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগ্রহ কম। অল্প কিছু টাকা খরচ করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে বিদেশ যাওয়ার পর তারা বিপদে পড়েন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক সরকার তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। এই প্রশিক্ষণ তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় বিদেশে অবস্থানকালে তারা অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হন।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক মানুষ যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় বিপদের শিকার হন। এটা খুবই দুঃখজনক এবং যাতে কেউ এ কাজ না করে সে ব্যাপারে মনোযোগ দেওয়া দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে চাকরিপ্রার্থী অনেক লোক দালালের খপ্পরে পড়ে জায়গা-জমি বিক্রি করে বিপদে পড়ে। তাদেরকে ভুল সিদ্ধান্তের জন্য দিনের পর দিন জেলে কাটাতে হয়।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী কল্যাণ তহবিলকে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নয়, প্রবাসীদের কল্যাণে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘বৈদেশিক অর্থের বড় অংশই আসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে। আমাদের দূতাবাস ও মিশনগুলো তাদের অর্থেই পরিচালিত হয়। তাই আমি চাই প্রবাসী কল্যাণ তহবিল তাদের কল্যাণেই ব্যবহৃত হোক।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠায় এই তহবিল ব্যবহৃত হবে এবং সেই স্কুলগুলো এই তহবিল দিয়েই চলবে। কেননা প্রবাসীদের টাকা দিয়েই এই তহবিল গঠন করা হয়। আমাদের এটি মনে রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকেলে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে দোয়া করেন। ছবি : ফোকাস বাংলা

মদিনায় বাংলাদেশী স্কুল বন্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্কুল বন্ধ হবে না। এটি চালু থাকবে। ‘এজন্য যত টাকা দরকার আমি দেব’ উল্লেখ করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবকে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।

প্রবাসীদের কল্যাণে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নিয়েছি এবং যারা বিদেশ যেতে চায় তারা এজন্য এ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে।’

দেশের উন্নয়নে তাঁর সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলোর বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি ১০ বছর মেয়াদী পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী শতাব্দীতে দেশের অবস্থা এবং আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কি হবে তা মনে রেখে ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন করেছি।’

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’ এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই দেশে একটা লোকও গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত থাকবে না এবং আমরা এ লক্ষ্য অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান এবং প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দায় ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।