ভারতে তিন হাজার কোটি রুপির ভাস্কর্য! অজানা ১০ তথ্য

Looks like you've blocked notifications!

ভারতে নির্মিত হলো বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য। বিশ্বরেকর্ড গড়া এ ভাস্কর্য উচ্চতায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ দ্বিগুণ। এটির উচ্চতা ১৮২ মিটার, যা কি না ৬০ তলা ভবনের সমান উঁচু। এ ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৯৮৯ কোটি রুপি, বাংলাদেশি অর্থে যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

ভারতের গুজরাট রাজ্যে নর্মদা নদীর পাশে নির্মিত ভাস্কর্যটি দেশটির প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের। বল্লভভাইয়ের ১৪৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ বুধবার ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশাল এ ভাস্কর্যের ব্যাপারে অজানা ১০টি বিষয় :  

১. কলসভরা নর্মদা নদীর মাটি ও পানি ঢেলে বল্লভভাই প্যাটেলের ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্প শুরু করেন মোদি।

২. দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা রাখা ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। ঐতিহ্যবাহী ধুতি ও শাল পরিহিত অবস্থায় তাঁর এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে। লৌহমানব বলে পরিচিত বল্লভভাইয়ের ভাস্কর্যটি বানাতে সারা দেশ থেকে লোহা সংগ্রহ করা হয়।

৩. এটির মূল নকশা করেন পদ্মভূষণ পুরস্কারপ্রাপ্ত ভাস্কর রাম ভি সুতার। লার্সেন ও টুব্রো এবং রাষ্ট্রায়ত্ত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সরোবর নর্মদা নিগম লিমিটেড এটি নির্মাণ করে। আড়াইশ প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে ৩৩ মাসব্যাপী তিন হাজার ৪০০ শ্রমিক এটি নির্মাণে শ্রম দেন। 

৪. ভারতের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে নির্মিত ভাস্কর্যটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। এর আগ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য চীনের হেনান প্রদেশের ‘স্প্রিং টেম্পল’র বুদ্ধমূর্তির চেয়ে এটি ১৭৭ ফুট বেশি উঁচু।

৫. এ ভাস্কর্যের মূল কাঠামো নির্মিত হয়েছে লোহার পাত ও কংক্রিট দিয়ে, বাইরের অংশে ব্যবহার করা হয়েছে চীন থেকে আমদানি করা ব্রোঞ্জ। কংগ্রেসপ্রধান রাহুল গান্ধী বারবার সরকারের সমালোচনা করে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন, ভাস্কর্যটিকে লোকে ‘মেইড ইন চায়না’ বলে ডাকবে।

৬. ভাস্কর্যটি নির্মাণে যে আকৃতির ব্রোঞ্জের পাত ব্যবহার করা হয়েছে, ভারতে তা নির্মাণ করা হয় না বলে আন্তর্জাতিক নিলাম ডাকা হয়। সে সূত্রেই চীন থেকে ব্রোঞ্জ আমদানি করা হয় বলে কর্মকর্তারা জানান।

৭. ভাস্কর্যটির ১৯৩ মিটার উচ্চতায় দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে নিসর্গ দেখার ব্যবস্থা। একসঙ্গে দুইশ দর্শনার্থী সেখানে আরোহণ করতে পারবেন। ১৫৩ মিটার উচ্চতায় আরেকটি স্থানে উঠে দর্শনার্থীরা সরোবর দাম, জলাশয় ও বিন্ধ্য পর্বতমালা উপভোগ করতে পারবেন। দুটি দ্রুতগতির লিফটের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের ওঠানামা করানো হবে।

৮. বল্লভভাইকে উৎসর্গ করে ভাস্কর্যের পাদদেশে নির্মিত হয়েছে একটি জাদুঘর।

৯. প্রকল্পের সব কাজ শেষ হলে এখানে গড়ে দৈনিক ১৫ হাজারের মতো দর্শনার্থী আসবেন বলে কর্মকর্তাদের ধারণা।

১০. পাদদেশে নির্মিত জাদুঘরটিতে প্রায় ৪০ হাজার নথি, দুই হাজার আলোকচিত্র ও বল্লভভাইয়ের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণার জন্য একটি গবেষণা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।