ইরানের ওপর কঠিনতম নিষেধাজ্ঞার খড়্গ যুক্তরাষ্ট্রের
পূর্বঘোষণা অনুসারে ইরানের ওপর কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ সোমবার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশ।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যৌথ পরমাণু চুক্তির ফলে যেসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, এর ভেতর দিয়ে সেগুলো আবার পুনর্বহাল করল ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি তেল রপ্তানি, জাহাজ বাণিজ্য ও ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্য করেই মূলত এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
শুধু ইরানের ওপরে নয়, ইরানের সঙ্গে যেসব দেশ বা প্রতিষ্ঠান লেনদেন করবে, তাদের ওপরেও নিষেধাজ্ঞার খড়্গ নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে একে কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা বলা হচ্ছে।
এদিকে ইরানের সঙ্গে যৌথ পরমাণু চুক্তিতে থাকা যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স এ অবস্থায় ইরানকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে এ নিষেধাজ্ঞা বড় রকম চাপের মুখে ফেলতে পারবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
অন্যদিকে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পক্ষে সাফাই গেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ইরানের ওপর ভবিষ্যতে আরো কঠোর হবেন তারা এবং তা হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত অবস্থানের নিদর্শন। দেশটি ইরানকে পরমাণুসমৃদ্ধ হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে সরিয়ে আনতে চায়। এ ছাড়া আরব বিশ্বে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে নতুন করে পুনর্বহাল করা এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। গতকাল দেশটির প্রধান নগরীগুলোতে ‘যুক্তরাষ্ট্র মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে ফেটে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখলের ৩৯তম বছর পালনকালে একত্রিত হয় তারা। সে সময় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির অন্যতম দোসর ইসরায়েলের পতাকাও পোড়ায়।
ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে কিছুই করে উঠতে পারবে না এমনই মনে করেন সাধারণ ইরানি নাগরিকরা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক নারী ইরানি (৫০) বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা বরাবরই ছিল। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তারা যত কঠোর হবে, আমরাও ততই শক্তিশালী হব। একই সঙ্গে সব সময়ই সর্বোচ্চ নেতার প্রতি অনুগত থাকবে ইরানের নাগরিক।’
নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য সোম ও মঙ্গল আকাশপথে মহড়া দেবে ইরানের সামরিক বাহিনী।