ইরাকে আইএসের নৃশংসতার সাক্ষী ২ শতাধিক গণকবর
ইরাকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মৃতদেহ ভরা দুই শতাধিক গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
বিবিসি জানায়, জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর থেকে প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাকের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের নিনেভেহ, কিরকুক, সালাহ আল-দীন এবং আনবার প্রদেশে ওই সব গণকবর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে মৃতদেহের সংখ্যা ১২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ জানায়, গণকবরগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করা দরকার, কারণ যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা কতটা ব্যাপক তার প্রমাণ আছে এসব কবরে।
জেনেভা থেকে বিবিসির প্রতিনিধি ইমোজিন ফুকস জানান, এ গণকবরগুলো পাওয়া গেছে এমন সব এলাকায়, যা একসময় আইএসের দখলে ছিল।
মসুল শহরের বাইরের একটি গর্তে খুঁজে পাওয়া গেছে আটজনের মরদেহ। খাফসা শহরে আরেক খাদে পাওয়া গেছে কয়েকশ’ মানুষের দেহাবশেষ। অনেকের মৃতদেহই শনাক্ত করা যায়নি। নিহতের মধ্যে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী থেকে শুরু করে ইরাকের সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আছে।
এর আগে আনুমানিক এক হিসাব অনুসারে জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছিল, ইরাকে আইএসের হাতে অন্তত ৩৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছর সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল আইএস, সে সময় এসব অঞ্চলে বহু মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে তাদের মতাদর্শের বিরোধী লোক থেকে শুরু করে, সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজন, ইয়াজিদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল। শত শত ইরাকি পরিবার এখনো তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।
এ ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যা বলে অভিহিত করে গণকবরগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা, দেহাবশেষ উদ্ধার ও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের লক্ষ্যে তহবিল বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে যেসব পরিবার হারানো স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে, তাদের সহায়তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
গত বছর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা, ইরাকি সরকারি বাহিনী ও মিলিশিয়াদের মিলিত অভিযানে আইএস পরাজিত হয়। তবে এখনো কিছু এলাকায় তাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।