চিটফান্ড দুর্নীতিতে ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্ত মোহতা গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
বৃহস্পতিবার শ্রীকান্ত মোহতাকে তাঁর সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থেকে আটক করে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিটফান্ড দুর্নীতিতে এবারে গ্রেপ্তার হলেন বিখ্যাত সিনেমা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের (এসভিএফ) কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা। পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজভ্যালিকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হলো তাঁকে।

সকাল থেকে দীর্ঘ জেরার পর শ্রীকান্ত মোহতাকে আজ বৃহস্পতিবার প্রথমে সংস্থার কার্যালয়েই আটক করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। পরে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে ফের তাঁকে জেরা করা হয়। তার পরই শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধারকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেন গোয়েন্দারা।

সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, আজ রাতে তাঁকে উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হবে। আগামীকাল শুক্রবার তাঁকে খুরদা রোড আদালতে পেশ করা হবে। শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ কোটি রুপি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে রোজভ্যালি সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে জেরা করে শ্রীকান্ত মোহতার সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেনের তথ্য জানতে পারেন সিবিআই কর্তারা।

শ্রীকান্ত মোহতা নিজের প্রভাব খাটিয়ে রোজভ্যালির ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সে কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে রোজভ্যালির থেকে মোটা অর্থ নিয়েছিলেন। একইসঙ্গে গৌতম কুণ্ডুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে।

এদিন জেরা পর্বে রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর দেওয়া তথ্যের সঙ্গে শ্রীকান্ত মোহতার তথ্যের মিল না পাওয়ায় গোয়েন্দারা তাঁকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেন। শুধু রোজভ্যালি নয়, পশ্চিমবঙ্গের আরেক বৃহত্তম বেসরকারি অর্থিলগ্নি সংস্থা সারদা’রও ব্যবসা বাড়াতে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে সহযোগিতা করেছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তিনি এ কাজ করেছিলেন।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, হাওলার মাধ্যমে বিদেশে রুপি পাচারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মের কর্ণধার। যে কারণে শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে তদন্তে আয়কর দপ্তরেরও সাহায্য নিচ্ছে সিবিআই। শ্রীকান্ত মোহতার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ, সারদার অর্থেই একাধিক সিনেমার বিদেশ শুটিংও সেরেছিলেন প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা। ভুয়া সংস্থার মাধ্যমে সেই অর্থের খরচ দেখান তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার কসবা এলাকার একটি অভিজাত শপিং মলে এসভিএফের কার্যালয়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা শ্রীকান্ত মোহতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী গোয়েন্দারা। জিজ্ঞাসাবাদে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তদন্তকারীরা। দেখাতে পারেননি লেনদেন সংক্রান্ত বহু নথিপত্রও।

শ্রীকান্ত মোহতার বক্তব্যে প্রচুর অসঙ্গতি থাকায় তাঁকে আটক করে নিয়ে আসা হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দপ্তরে। পরে সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শ্রীকান্ত মোহতার কোম্পানি ‘চোখের বালি’, ‘রেইনকোট’, ‘মেময়েরস ইন মার্চ’, ‘অটোগ্রাফ’, ‘ইতি মৃণালিনী’, ‘বাইশে শ্রাবণ’ ও ‘হেমলক সোসাইটি’র মতো বহু পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমার প্রযোজনা করে। ভারতের অনেক বিখ্যাত অভিনেতা ও পরিচালক শ্রী ভেঙ্কটেশের সিনেমা করেছেন।