ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় নিহতদের দাফন শুরু
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের দাফনের কাজ শুরু হয়েছে। দুই সিরিয়ান বাবা ও ছেলেকে দাফনের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়।
দাফন হওয়া দুই সিরিয়ান নাগরিক হলেন খালেদ মুস্তাফা (৪৪) ও হামজা মুস্তাফা (১৬)। গত বছর শরণার্থী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে তাঁরা নিউজিল্যান্ডে যান। এখন এ পরিবারে কেবল হামজার মা আর হামলায় আহত ছোট ভাই জাহিদ মুস্তাফা বেঁচে রইল।
দাফনের আগে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব যাতে মৃতদেহের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারে, সে জন্য বড় তাঁবু টানিয়ে দেওয়া হয়। ক্রাইস্টচার্চের ইসলামিক সেন্টারসংলগ্ন কবরস্থানে এ দাফনকাজ উপলক্ষে শত শত শোকসন্তপ্ত মানুষ ভিড় জমান।
ইসলামী ঐতিহ্যে মৃতদেহ যত দ্রুত সম্ভব সৎকারের বিধি থাকলেও মসজিদ হামলায় নিহতদের মৃতদেহ শনাক্তকরণ ও আনুষঙ্গিক নানা কারণে লাশ হস্তান্তরে বিলম্ব হচ্ছে।
বাবা খালেদ মুস্তাফা ও ভাই হামজার দাফনে হুইলচেয়ারে করে উপস্থিত হন হামলায় আহত জাহিদ মুস্তাফা। ছবি : সংগৃহীত
বৃহস্পতিবারের আগেই সব মৃতদেহ হস্তান্তর ও আরো কিছু দাফন সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মাঝে দেশটির পুলিশ হামলায় নিহত ছয় ব্যক্তির নাম ঘোষণা করেছে। নিহতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কালো কাপড় ও হেলমেট পরা এক বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে শুরু করে। এতে সর্বশেষ ৫০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে চারজন বাংলাদেশি রয়েছেন। এ সময় শহরের আরো একটি মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অনলাইনে সরাসরি হামলার ভিডিওচিত্র সম্প্রচারকারী এক বন্দুকধারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূখণ্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না, এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আদালত ব্রেন্টন ট্যারান্টের জামিনবিহীন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ব্রেন্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ওই দিন তাকে সাউথ আইল্যান্ড সিটি হাইকোর্টে তোলা হবে।
ঘটনার পর পরই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন অস্ত্র আইন পরিবর্তনের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজকের সংবাদ সম্মেলনে তিনি অস্ত্র আইনের নতুন সংশোধনীর ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি। তবে এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনার পর তিনি স্বয়ংক্রিয় (অ্যাটোমেটিক) অস্ত্র নিষিদ্ধের পক্ষে বলে জানান।