গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের দখলের স্বীকৃতি ট্রাম্পের
১৯৬৭ সালে সিরিয়ার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আজ মঙ্গলবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে ওই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প।
বিবিসি জানায়, ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের সময় আগামী মাসে জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হতে যাওয়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাশে ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে গোলান প্রশ্নে বিগত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলে দিলেন ট্রাম্প।
এদিকে সিরিয়া এ ঘটনাকে দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি ট্রাম্পের অবমাননা হিসেবে অভিহিত করেছে। সম্ভাব্য যে কোনো মূল্যেই গোলান মালভূমি পুনরুদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
কিন্তু ঘোষণাপর্বে উপস্থিত সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই গোলান বেহাত হতে দেবেন না। ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এমন সময় আপনার এ ঘোষণা এলো, যখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য এটি বেশি দরকার ছিল।’
‘ইসরায়েল আত্মরক্ষার এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গোলান জয় করে। এখানে রয়েছে ইহুদিদের হাজার বছরের শেকড়।’
এদিকে ট্রাম্প গোলান প্রশ্নে ইসরায়েলের এ স্বীকৃতি অনুমোদন করলেও, অন্য কোনো দেশ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার সম্ভাবনা প্রায় ক্ষীণ।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সানা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানায়, ‘এটি আন্তর্জাতিক মহলের জন্য এক লজ্জাজনক ঘটনা।’
সিরিয়ার চলমান সংঘাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন করা রাশিয়া এ ঘটনার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় সতর্ক করেছে যে, এটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলকে নতুন করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
অন্যদিকে সিরায়ার বিরোধী পক্ষকে সমর্থনকারী তুরস্ক জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসম্ভব’ এ ঘোষণা মেনে নেওয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে অভিযোগ জানাবার কথা জানায় তারা।
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের এক যুদ্ধে গোলান ছিনিয়ে নেওয়ার পর ১৯৮১ সালে কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছাড়াই ইসরায়েল একপাক্ষিকভাবে গোলানকে নিজেদের ভূমি হিসেবে দখল করে নেয়।