উপর্যুপরি হ্যাকিং সত্ত্বেও কানহাইয়ার ক্রাউডফান্ডিং সাইটে ৭০ লাখ রুপি

Looks like you've blocked notifications!
ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিহারের বেগুসরাইতে সিপিআইয়ের প্রার্থী তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমার। ছবি : সংগৃহীত

ওয়ান ডেমোক্রেসি ডট ইন নামে একটি গণচাঁদার (ক্রাউডফান্ডিং) ওয়েবসাইট খুলে তাতে সরাসরি সমর্থকদের কাছ থেকে নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর অর্থ আহ্বান করেন ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের সিপিআইয়ের প্রার্থী তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমার।

গত ২৬ মার্চ চালু হওয়ার পর ঠিক মতো দুদিন চালু ছিল তাঁর ক্রাউডফান্ডিং সাইটটি। এরপর তাতে শুরু হয় উপর্যুপরি সাইবার হামলা। থেমে থেমে কাজ করলেও ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন এই তরুণ নেতা। এরই মধ্যে ৭০ লাখ রুপি অনুদান দিয়েছেন কানহাইয়ার সমর্থকরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফেসবুক পোস্টে একথা জানান তিনি।

২৯ এপ্রিলের ভোটে বিহারের বেগুসরাই আসন থেকে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কানহাইয়া কুমার।

তবে অভিনব এবং স্বচ্ছ এই উদ্যোগটিতে সাইবার হামলার পেছনে সরাসরি সরকারি ষড়যন্ত্রের কথা না বললেও তিনি একে ভারতীয় রাজনীতিতে করপোরেটদের নিয়ন্ত্রণের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, অবৈধ সম্পদের অধিকারী ও পেশিশক্তিওয়ালারা সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিকে রাজনীতিতে আসতে দেবে না। পদে পদে বাধা সৃষ্টি করে যাবে তারা।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ভোলা সিং ৪ লাখ ২৮ হাজার ২২৭ ভোট পেয়ে লালু প্রসাদ যাদবের দল ভারতীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রার্থী মো. তানভির হাসানকে পরাজিত করেন। তানভির পান ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯২ ভোট। যেখানে সিপিআইয়ের প্রার্থী রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং ১ লাখ ৯২ হাজার ৬৩৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। স্থানীয় ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে ১০ লাখ ভোটারের এই আসনটিতে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

২৯ এপ্রিলের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির এই প্রার্থী বলেন, ‘সাধারণ জনগণ তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে টাকা দেবে তাতে কোনো সমস্যা দেখি না। আমরা করপোরেটের টাকা নিচ্ছি না। আমরা ক্রাউডফান্ডিং করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি।’ তিনি বলেন, আগের দিনের ‘এক ভোট এক নোট’প্রচারণার মতো ওয়েবসাইটে প্রত্যেকের নাম ও অনুদানের পরিমাণ পরিষ্কারভাবে লেখা থাকে। এ সময় তিনি ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে নামপরিচয় গোপন রেখে গতবছর চালু হওয়া বিজেপির রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহের নীতির সমালোচনা করেন।

ভারতে ৩৫ বছরের নিচে বয়স এমন যুবকদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ। এবারের ভোটে তরুণ ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কানহাইয়া কুমার তেমনই একটি উদাহরণ। তবে কানহাইয়ার দলীয় পরিচয়ের বাইরে তাঁর আপসহীন ব্যক্তিত্ব তাঁর এই বিপুল জনপ্রিয়তার কারণ বলে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা।

দিল্লির একটি আইটি কোম্পানি বিনামূল্যে ক্রাউডফান্ডিং সাইটটির রক্ষণাবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন কানহাইয়ার সহকারী ধনঞ্জয়। তবে তিনি জানিয়েছেন, সঙ্গত কারণেই কোম্পানিটির নাম জানানো হচ্ছে না।

কাশ্মীরী আফজাল গুরুর ফাঁসির পর প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা হয় এবং তিনি তাতে গ্রেপ্তার হন। বিজেপির সাংসদদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী যড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা হয়। ২০০১ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে বোমা হামলার দায়ে ২০১৩ সালে আফজাল গুরুর ফাঁসি কার্যকর করা হয় এবং দিল্লির তিহার জেলেই তাঁকে কবরস্থ করা হয়।