ভারতে চলছে লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ

Looks like you've blocked notifications!

ভারতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান। এ দফায় দেশটির ১২টি রাজ্যের মোট ৯৫টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে নিরাপত্তার কারণে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ করা হবে।

দ্বিতীয় দফায় তামিলনাড়ুর ৩৮টি, কর্ণাটকের ১৪, মহারাষ্ট্রের ১০, উত্তরপ্রদেশের ৮, উড়িষ্যার ৫, আসামের ৫, বিহারের ৫, পশ্চিমবঙ্গের ৩, ছত্তিশগড়ের ৩, জম্মু-কাশ্মীরের ২, পদুচেরি ১ ও মণিপুরের একটি আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে।

এ দফায় সর্বমোট ৯৭টি আসনে ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনীবিধি সংশ্লিষ্ট কারণে ত্রিপুরার পূর্ব ত্রিপুরা ও তামিলনাড়ুর ভেলোর আসনের ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়। ২৩ এপ্রিল পূর্ব ত্রিপুরায় ভোট নেওয়া হবে। এ ছাড়া ভেলোরে দ্রাবিড় মুন্নেতে কড়গম (ডিএমকে) পার্টির প্রার্থীর কার্যালয় থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উদ্ধারের কারণে ভোট স্থগিত করা হয়।

দ্বিতীয় দফায় যাতে প্রথম দফার মতো নির্বাচনী সহিংসতা বা কারিগরি ত্রুটি না থাকে, এ ব্যাপারে কড়া সতর্কতা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফায় নির্বাচনী সহিংসতায় অন্ধ্রপ্রদেশের ইনন্তপুর জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়। সারা দেশে আহত হন প্রায় ১১ জন। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ইভিএম বিকল হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

প্রথম দফায় মোট ৯১টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়। তাতে মোট ৬৯.৪৩ শতাংশ  ভোট পড়ে।

এদিকে, আজ ভারতের প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। দেশব্যাপী দেড় লাখেরও অধিক কেন্দ্রে তাদের ভোট গ্রহণ করা  হবে।

এ দফায়  দেড় হাজারের বেশি প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে। এবারের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে আছেন বিজেপির বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দ দেবগৌড়া, জিতেন্দ্র সিং ও সেলিব্রেটি প্রার্থী অভিনেত্রী হেমা মালিনী, কংগ্রেসের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে, সাবেক মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি, সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ছেলে কীর্তি চিদম্বরম, সুস্মিতা দেব ও তারিক আনোয়ার, ডিএমকের নেত্রী কানিমোঝি ও সাবেক মন্ত্রী এ. রাজা ও দয়ানিধি মারান, পিএমকের আম্বুমানি রামদোস,  জনতা দলের (সেকুলার) সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া প্রমুখ।

দ্বিতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গের আসন তিনটি হলো দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রায়গঞ্জ। এ তিন কেন্দ্রেই দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার চালিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী,  বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ ও তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জলপাইগুড়ি আসনে লড়াইয়ে নেমেছেন তৃণমূলের পক্ষে বিজয় চন্দ্র বর্মণ, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, কংগ্রেসের মণী কুমার দার্নেল ও সিপিআইএমের ভগীরথ চন্দ্র রায়। এ আসনে মোট ভোটার ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৮২৯। মোট ভোটকেন্দ্র এক হাজার ৮৬৮।

অন্যদিকে দার্জিলিংয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের অমর সিং রাই, বিজেপির রাজু বিস্তর, কংগ্রেসের শংকর মালাকার ও সিপিআইএমের সমন পাঠক। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ১৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৩৫। মোট ভোটকেন্দ্র এক হাজার ৬২৩।

এ ছাড়া রায়গঞ্জ আসনে তৃণমূলের কানাইয়ালাল আগরওয়াল, বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী, কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি ও সিপিআইএমের প্রার্থী মহম্মদ সেলিম একে অপরের মুখোমুখি হয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৭ ও কেন্দ্র সংখ্যা এক হাজার ৫৩০টি।

ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনে মোট সাত দফায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আজ দ্বিতীয় দফা শেষে পরে ২৩ ও ২৯ এপ্রিল এবং ৬, ১২ ও ১৯ মে যথাক্রমে অন্যান্য ধাপের ভোট গ্রহণ হবে। এবারের  নির্বাচনে গোটা দেশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটির মতো। আগামী ২৩ মে ভোটের চূড়ান্ত  ফল ঘোষণা করা হবে।