শ্রীলঙ্কায় মুসলিমবিরোধী সহিংসতায় ব্যবসায়ী নিহত

Looks like you've blocked notifications!
শ্রীলঙ্কার কিনিয়ামা শহরে মসজিদে ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। ছবি : বিবিসি

শ্রীলঙ্কায় মুসলিমবিরোধী সহিংসতায় হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একজন ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ধরনের সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সরকার।

গতকাল সোমবার শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিমের পোট্টালাম শহরে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বিক্ষুব্ধরা ওই মুসলিম ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালে তিনি নিহত হন। এখন পর্যন্ত সহিংসতায় এটিই প্রথম নিহতের ঘটনা বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া দেশটির বেশ কিছু জায়গায় মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে ভাঙচুরসহ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিমের কিনিয়ামা শহরের একটি মসজিদের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরআনের কয়েকটি অংশও মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

গতকাল সোমবার দেশের সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি বলেন, ‘এ সহিংস পরিস্থিতির কারণে গত মাসে গির্জা ও হোটেলে বোমা হামলার ঘটনা তদন্তের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত রোববার রাতে দেশটির সহিংসতাকবলিত এলাকায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

রয়টার্স বলছে, ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে দেশটির পশ্চিমের খ্রিস্টান-অধ্যুষিত উপকূলীয় শহর চিলোতে কিছু যুবক মসজিদে ও মুসলিমদের দোকানে পাথর নিক্ষেপ করে। তারা একজনকে পিটিয়েছেও।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ফেসবুকে ওই পোস্টটি দিয়েছিলেন ৩৮ বছর বয়সী আবদুল হামিদ মোহাম্মদ হাসমার। তিনি তাতে লেখেন, ‘একদিন তোমাদের কাঁদতে হবে।’ তারপরই সহিংসতার শুরু হয়। পুলিশ হাসমারকে গ্রেপ্তার করে।

এর পাশাপাশি মসজিদ ও দোকানে হামলার অভিযোগে কুরুনেগালা জেলা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু বলেন, এর পরই লোকজন গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে রাতে কারফিউ জারি করা হয়।’

শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলায় মুসলমানদের অসংখ্য বাড়িঘর, মসজিদ ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।