বৈধতা পেল মানুষের মরদেহ থেকে জৈবসার উৎপাদন
মানুষের মরদেহ থেকে জৈবসার উৎপাদনকে বৈধতা দিয়েছে ওয়াশিংটন। এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে এটাই প্রথম। গতকাল মঙ্গলবার অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জে ইন্সলে মানুষের মৃতদেহ সৎকারে ‘প্রাকৃতিক জৈব’ পদ্ধতিবিষয়ক একটি বিলে স্বাক্ষর করেন।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট জানায়, জৈব সার উৎপাদনের অংশ হিসেবে এ পদ্ধতিতে মৃতদেহকে কাঠের কুচি ও খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে রেখে দেওয়া হবে। এতে করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা সারে পরিণত হবে।
অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলভিত্তিক পিপলস মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক নোরা মেনকিন বলেন, ‘এ পদ্ধতির মাধ্যমে মৃত্যুর পর আমাদের শরীরকে অর্থপূর্ণ কোনো কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’
মৃতদেহকে জৈব সারে পরিণত করে সৎকার করাকে শবদাহ কিংবা কবর দেওয়ার চেয়ে বেশি প্রকৃতিবান্ধব বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতির সমর্থকদের দাবি শবদাহ বা কবর দেওয়া মাটিকে দূষিত করে। শুধু তাই নয়, কফিনগুলো মাটির নিচেও জায়গা দখল করে রাখে।
এ উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষক সিয়াটলের ডেমোক্র্যাট সিনেটর জেমি পেডারসেন বলেন, ‘কারো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রকৃতি বা মাটিকে এত ভারী বোঝা দেওয়া একেবারে অনুচিত।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করার সময় মৃতদেহকে জৈব সারে রূপান্তরের এ ধারণা পান পেডারসেনের অন্যতম সঙ্গী এবং মৃতদেহকে সারে রূপান্তরবিষয়ক সংগঠন রিকম্পোজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাটরিনা স্পেড।
পশুদের মরদেহ থেকে বহু যুগ ধরেই কৃষকরা এভাবে সার উৎপাদন করে আসছেন।
স্পেডের ধারণাকে বাস্তবে পরিণত করার অংশ হিসেবে গত বছর ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া ছয়টি মানবদেহকে জৈব সারে পরিণত করা হয়।
রিকম্পোজের ওয়েবসাইটে মৃতদেহ সৎকারের নতুন এই পদ্ধতি বিষয়ে লেখা হয়েছে, “আমাদের সেবা ‘রিকম্পোজিশন’ আমরা মমতার সঙ্গে শবদেহকে মাটিতে বদলে দিই, যাতে মৃত্যুর পরেও আমরা নতুন প্রাণের সেবা করতে পারি।”
এ উদ্যোগের কারণে অনেকের কাছ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও পেয়েছেন বলে জানান সিনেটর পেডারসেন। অনেকেই বিষয়টিকে জঘন্য বলে মন্তব্য করেছেন।
তবে পুরো বিষয়টি যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পেডারসেন।