বিদ্যার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন
নেপালের নয়া প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন বিগত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষ দিকে। বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বিদ্যা দেবীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি।
বর্তমানে তিনি নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (সংযুক্ত মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট) ভাইস চেয়ারপারসন। তিনি দুই দশক দলের সহযোগী সংগঠন অল নেপাল উইমেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব দেন।
রাজনীতির চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ তিনি নেপালের প্রেসিডেন্ট। মাঝে হারিয়েছেন স্বামী নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মদন ভাণ্ডারিকে। ১৯৯৩ সালে এক রহস্যময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মদন ভাণ্ডারি। তিনি ছিলেন নেপালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা।
নেপালের সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, ভোজপুর জেলার গুরানসে গ্রামে ১৯৬১ সালের ১৯ জুন জন্মগ্রহণ করেন বিদ্যা দেবী।
১৯৮০-৮১ সালের দিকে তিনি নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিএন-এমএল এর সদস্যপদ লাভ করেন। এর প্রায় দুই বছর আগে তিনি কমিউনিস্ট নেতা মদন কুমার ভাণ্ডারিকে বিয়ে করেন।
সংযুক্ত কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম নেতা মদন কুমার ছিলেন নেপালের বহুদলীয় গণতন্ত্রের আন্দোলনের শীর্ষ নেতা। ১৯৯৩ সালের ১৬ মে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। বিষয়টি এখনো মানুষের কাছে রহস্যময়। নেপালের অধিকাংশ মানুষের ধারণা, এটি ছিল হত্যাকাণ্ড।
মদন ভাণ্ডারির মৃত্যুতে নেপালের পার্লামেন্টে কাঠমান্ডু-১ আসনটি শূন্য হয়। ওই আসনে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে অংশ নেন বিদ্যা দেবী। তখন নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেপালি কংগ্রেসের নেতা কৃষ্ণপ্রসাদ ভট্টরাইকে পরাজিত করে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য হন। পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯৯৪ ও ১৯৯৯ সালেও পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন।
১৯৯৪ সালে বিদ্যা দেবী পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার নেপালি কংগ্রেসের নেতা ধামান নাথ ধুঙ্গানাকে পরাজিত করেন। ২০০৬ সালের অন্তর্বর্তী পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন তিনি।
বিদ্যা দেবী ২০০৯ সালে মাধবকুমার নেপালের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ ও ২০১৪ সালে পার্টির অষ্টম ও নবম কনভেনশনে বিদ্যা দেবী ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালের ষষ্ঠ কনভেনশনে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন।
নেপালের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন বিদ্যা দেবী।