এএসপিআইর প্রতিবেদন

রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে মিয়ানমারের প্রস্তুতি খুবই নগণ্য

Looks like you've blocked notifications!

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমার প্রস্তুত বলে দাবি করলেও অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেয়নি মিয়ানমার।

স্যাটেলাইট থেকে সংগৃহীত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ছবি বিশ্লেষণ করে গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই)।

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনীর এক কঠোর অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। গণহত্যার উদ্দেশ্যে ওই অভিযানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্বিচারে হত্যা, গণধর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ওই সেনা অভিযানে প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

এএসপিআইর প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের অঙ্গীকার করলেও স্যাটেলাইটে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে তাদের বাড়িঘর ‘পুনর্নির্মাণের কোনো আলামত’ পাওয়া যায়নি। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিগুলোতে দেখা যায়, এখনো রাখাইনের কিছু কিছু এলাকায় আবাসিক ভবন ধ্বংস অব্যাহত রয়েছে।

এএসপিআইর ইন্টারন্যাশনাল সাইবার পলিসি সেন্টারের গবেষক নাথান রুসার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে আবাসিক এলাকায় অব্যাহত ধ্বংসযজ্ঞের আলামত পরিষ্কারভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে। এর ফলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি রাখাইনের প্রশাসনিক বিভাগের উপপরিচালক কিয়াও সোর তুন।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত বলে মিয়ানমার বারবার দাবি করে আসছে। এমনকি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ার জন্য বাংলাদেশের ব্যর্থতাকে দায়ী করছে মিয়ানমার।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রয়টার্সের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য আবাসন নির্মাণ করছে সেখানকার প্রশাসন। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকারের একটি পুনর্বাসন ম্যাপে দেখা যায়, বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ নিজ গ্রামে নয়, অন্যত্র পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।