আমি কাশ্মীরি নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন : মালালা

কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নোবেল জয়ী পাকিস্তানের সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই। তিনি জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটিয়ে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর কাশ্মীরের শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।
মালালা ইউসুফজাই টুইটে লেখেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, এমনকি আমার মা-বাবা যখন ছোট ছিলেন, আমার দাদা-দাদির তরুণ বয়স থেকেই কাশ্মীরের মানুষ টালমাটাল পরিস্থিতির সঙ্গে যুদ্ধ করছে।’
২২ বছর বয়সী মালালা জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ আমি কাশ্মীরি শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই সহিংস পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ তাদের জীবন। এবং এই সংঘাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদেরই।’
জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস করা এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিতসহ পাঁচ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করার পরের দিনেই ইউসুফজাই এই কথা বললেন।
এদিকে পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন করবে বলেও জানিয়েছে।
২০১২ সালের অক্টোবরে স্কুল বাসে ওঠার সময় এক বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হন মালালা ইউসুফজাই। এর পরই নারীশিক্ষা ও মানবাধিকারের পক্ষে একজন বিশ্ব প্রতীক হয়ে ওঠেন মালালা।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ব্রিটেনে অত্যাধুনিক চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন ইউসুফজাই। ২০১৪ সালে নারী শিক্ষা ও মানবাধিকারের সমর্থনে প্রচার করায় বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠতম ব্যক্তি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পান তিনি।
গত মঙ্গলবার সংসদে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সমাপ্ত করার একটি প্রস্তাব পাস করেছে বিজেপি সরকার। ওই রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল : জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে বিভক্ত করার একটি বিলও পাস করানো হয়েছে।
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগে সম্পদের মালিকানা ও মৌলিক অধিকারের বিষয়ে নিজেরাই নীতি প্রণয়ন করতে পারত কাশ্মীরিরা। এমনকি রাজ্যের বাইরের কারো সেখানে জমি কেনাও নিষিদ্ধ ছিল।
পাশাপাশি নিজেদের সংবিধান, আলাদা পতাকা ও আইন প্রণয়নের স্বাধীনতা ছিল তাদের। শুধু পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে।