আফগান সীমান্তের সেনাদের কাশ্মীর সীমান্তে পাঠাতে চায় পাকিস্তান

পাকিস্তানের আফগান সীমান্তে নিয়োজিত সেনাদের কাশ্মীর সীমান্তে মোতায়েন করার কথা ভাবছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান একথা জানান।
ইসলামাবাদ এমন সিদ্ধান্ত নিলে তালিবানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শান্তি আলোচনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদনা বোর্ডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আসাদ মাজিদ খান অবশ্য জোর দিয়ে বলেন, ‘আফগানিস্তান ও কাশ্মীর দুটি ভিন্ন ইস্যু। পাকিস্তান এ দুটির মধ্যে কোনো যোগসূত্র খুঁজছে না। তালিবানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা যাতে সফল হয় সেজন্য আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে সব করছি। আফগানিস্তানের শান্তিপ্রক্রিয়া যাতে সফল হয় সেজন্য আমরা পশ্চিম সীমান্তে (আফগানিস্তান) আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি। এখন পূর্ব সীমান্তে (কাশ্মীর) যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, তাহলে আমাদেরকে পুনরায় সেনা মোতায়েন করতে হতে পারে।’
ইসলামাবাদ এখন পূর্ব সীমান্ত পরিস্থিতি ছাড়া অন্যকিছুই ভাবছে না বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত।
ভারত পাকিস্তানের মধ্যে গত সপ্তাহে তেমন কোনো যোগাযোগই হয়নি জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। তবে ঠিক কতটা খারাপ তার ব্যাখ্যায় যাননি আসাদ মাজিদ খান।
‘পরমাণু অস্ত্রধর ও বড় সামরিক শক্তিমান দুটি দেশ আমরা। এবং আমাদের সংঘাতময় ইতিহাস রয়েছে। এক্ষেত্রে আমি আপনাদের সেদিকটা চিন্তা করতে বলছি না। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে তা অনেক খারাপই হবে।’ বলছিলেন রাষ্ট্রদূত।
এদিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের ভারতীয় সিদ্ধান্তকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘গালে থাপড়’ স্বরুপ বলে উল্লেখ করেছেন আসাদ মাজিদ খান। আজ মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক নিবন্ধে একথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত এই পাক রাষ্ট্রদূত।
কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততা করে এর সমাধানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার যে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিল, একে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গালে একটি ‘থাপড়’ হিসেবে উল্লেখ করেন পাক রাষ্ট্রদূত।
গত ৪ আগস্ট থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর নজিরবিহীন কড়া নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। পরদিন ৫ আগস্ট ভারতীয় সংসদে সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে বিল পাস হয়। এর ফলে কাশ্মীরিরা তাদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ভারতীয় সংবিধান থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে সেখানে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ভারত সরকার। দুজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা। এ ছাড়াও আট দিন ধরে কাশ্মীরিদের দৈনন্দিন চলাফেরায় ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে ভারত সরকার।