‘আমরা খুব বিপদে আছি,’ রাহুলের কাছে কাশ্মীরি নারীর আহাজারি (ভিডিও)

Looks like you've blocked notifications!

ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি রাহুল গান্ধীসহ বিরোধী কংগ্রেসের ১১ নেতাকে। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। আর সেই যাত্রাপথেই বিমানের মধ্যে এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন সাবেক কংগ্রেস সভাপতিসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা, যাতে অস্বস্তি বাড়তে পারে মোদি সরকারের।

দিল্লি ফেরতগামী বিমানের মধ্যেই রাহুলের সামনে কেঁদে ফেললেন কাশ্মীরের এক নারী। রাহুলকে শোনান তাঁর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা। আর তাতেই ৩৭০ ধারা রদের পর উপত্যকার অভ্যন্তরের একটি খণ্ডচিত্র চলে আসে সামনে। নেটিজেনরা সেই ভিডিও ছড়িয়ে দিতে থাকেন বিশ্বব্যাপী।

বিমানের ভেতরেই সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর কাশ্মীরিদের কী দুর্দশা এবং কী পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে, সে কথা শোনান এক মধ্যবয়সী কাশ্মীরি নারী।

রাহুলকে ওই নারী বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়েকে ঘর থেকে বাইরে বেরোতে দিচ্ছে না। আমার ভাই হৃদরোগাক্রান্ত। ১০ দিন ধরে তিনি চিকিৎসক দেখাতে পারেননি। আমরা খুব বিপদে আছি।’

ভিডিওতে দেখা যায়, এই কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ওই কাশ্মীরি নারী। আর রাহুল গান্ধী তাকে সান্ত্বনা দেন।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে সেখানে যেতে চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সঙ্গে ছিলেন ভারতের বিরোধী দলের ১১ নেতা। কিন্তু শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছালেও তাঁদের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। বিমানবন্দর থেকেই তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে।

তবে রাহুল গান্ধীসহ বিরোধী নেতারা শ্রীনগর পৌঁছানোর আগেই তাঁদের যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। কাশ্মীরের জনসংযোগ দপ্তর টুইট বার্তায় জানায়, রাজনৈতিক নেতাদের এ মুহূর্তে শ্রীনগর সফর না করাই উচিত। কারণ তাঁরা অন্য লোকদের অসুবিধায় ফেলবেন। এটা এমন একটা সময় যখন জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে সীমান্ত সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলার হুমকি থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে।

রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, কে সি বেণুগোপাল, আনন্দ শর্মা, তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদী, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা, ডিএমকের তিরুচি শিবা, আর জে ডির মনোজ জা, এনসিপির মজিদ মেনন, জেডিএসের কুপেন্দ্র রেড্ডি এবং লোকতান্ত্রিক জনতা দলের শরদ যাদব।

কাশ্মীরে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন ওই বিরোধী নেতারা। গুলাম নবি আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তো আইন ভাঙতে আসিনি।’ মনোজ ঝা বলেন, ‘কিছু লুকানোর না থাকলে প্রশাসন আমাদের যেতে দিচ্ছে না কেন?’

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার পর জম্মু-কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্ত জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন কোনোভাবেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের জম্মু-কাশ্মীরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

এর আগে কংগ্রেস নেতা সাংসদ গুলাম নবি আজাদ দুবার কাশ্মীরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে দিল্লি ফিরে আসতে হয় তাঁকে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও সিপিআই সাংসদ ডি রাজাও কাশ্মীরে ঢুকতে গিয়ে ব্যর্থ হন।