এবার যুদ্ধক্ষেত্র মহাকাশ, নয়া বাহিনী গড়লেন ট্রাম্প
পৃথিবীর মাটি ছাড়িয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো সম্ভাব্য রণক্ষেত্র হিসেবে এবার মহাকাশকে বেছে নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নতুন বাহিনীর নাম জানিয়েছেন, যারা মহাকাশে যুদ্ধের বিষয়টি তদারক করবে। নতুন এই বাহিনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেসকম’।
চীন ও রাশিয়া নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে—মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রধানদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার পর এ পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র।
যোগাযোগ ও নজরদারির জন্য ব্যবহৃত শতাধিক মার্কিন স্যাটেলাইটের কার্যক্রম দেখভাল করাসহ মহাকাশে মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তদারকি করাই হবে নতুন এই বাহিনীর মূল কাজ।
ট্রাম্প বলেন, ‘মহাকাশে আমেরিকার কর্তৃত্ব যেন কখনো হুমকির মুখে না পড়ে, তা নিশ্চিত করবে স্পেসকম।’
ট্রাম্প আরো বলেন, ‘আমেরিকার নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যে মহাকাশকেন্দ্রিক, আজকের এই বিশেষ দিনটি সেটাকেই স্বীকৃতি দিল।’
কেন মহাকাশ বাহিনী গঠন করলেন ট্রাম্প?
মহাকাশে যুদ্ধ নিয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র সিরিজ ‘স্টার ওয়ার্স’। এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য বিভিন্ন ধরনের বিশেষ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভালো ও মন্দের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে মহাকাশে লড়াই। মহাকাশে বিশেষায়িত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা এবং ‘স্টার ওয়ার্স’ স্টাইলে অস্ত্রবাজি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে ট্রাম্পের নতুন বাহিনী স্পেসকমের কাজ। আর তাই মহাকাশে যুদ্ধের জন্য আগে থেকেই একটি মার্কিন বিমান বাহিনীর অস্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও স্পেসকম গঠন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্ব দেবেন এয়ারফোর্স জেনারেল জন রেমন্ড। তিনি জানান, মহাকাশে সামরিক সক্ষমতা আরো বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রেমন্ড বলেন, ‘মহাকাশ একটি যুদ্ধ-লড়াইয়ের ক্ষেত্র। আমি মনে করি, আমাদের জীবনযাপন ও রণপন্থা নির্ভর করছে মহাকাশে আমাদের কতটা নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তার ওপর।’
চীন দাবি করছে, তাদের কাছে স্যাটেলাইট বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে মহাকাশভিত্তিক লেজার অস্ত্র তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
অবশ্য স্পেসকমকে একেবারে আনকোরা বাহিনী বলা যাবে না। এর আগে ১৯৮৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত কাজ করেছে স্পেসকম। ২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর (নাইন-ইলেভেন) যুক্তরাষ্ট্রে টুইট টাওয়ারে হামলার পর জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী কার্যক্রমে বিশেষ নজর দিতে হয় মার্কিন সামরিক বাহিনীকে। তাই তখন বন্ধ হয়ে যায় স্পেসকমের কার্যক্রম।
মহাকাশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক কার্যক্রমের খতিয়ান রাখে সিকিউর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—তিনটি দেশের কাছেই স্যাটেলাইট বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে।