দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম জেলে ঠাঁই হলো ভারতের সাবেক মন্ত্রীর
অবশেষে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় জেল বলে খ্যাত ভারতের তিহার জেলের ৭ নম্বর সেলে ঠাঁই হলো দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের। আদালতের নির্দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিদাম্বরমকে তিহার জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাখা হবে তাঁকে।
তিহার জেলের ডিজি সন্দীপ গোয়েল জানিয়েছেন, রাতে চিদাম্বরমকে রুটি, সবজি ও ডাল দেওয়া হয়েছে। থাকছে ওয়েস্টার্ন টয়লেট। এত দিন ধরে সিবিআই হেফাজতে ছিলেন চিদাম্বরম। ওই সময় তাঁকে সিবিআইর সদর দপ্তরের গেস্টহাউসে রাখা হয়েছিল।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে তিহার জেলে না যাওয়ার জন্য আইনজীবীদের মাধ্যমে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন চিদাম্বরম। শুনানির শুরু থেকেই চিদাম্বরমের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, তিহার জেলে যেতে চান না তাঁর মক্কেল। ৭৩ বছর বয়সে জেলে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি চিদাম্বরম অসুস্থ বলেও দাবি করেন কপিল। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে আমার মক্কেল ইডির হেফাজতেও যেতে রাজি।’
তবে শীর্ষ আদালত চিদাম্বরমের আবেদন খারিজ করে দেন। সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) আবেদন মেনেই আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান।
পরে আইনজীবী কপিল সিব্বল সাবেক এই অর্থমন্ত্রীকে আলাদা কক্ষ, খাট, বিদেশি টয়লেট ও ওষুধপত্র দিতে হবে বলে দাবি জানান। চিদাম্বরমের জন্য জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তারও দাবি জানানো হয়। যদিও সেই দাবি নাকচ হয়ে যায়।
আদালতের নির্দেশে তিহার জেলের ৭ নম্বর সেলের পৃথক কক্ষ চিদাম্বরমের জন্য সংরক্ষিত করা হয়।
অন্যদিকে সিবিআইর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চিদাম্বরম প্রভাবশালী নেতা। তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানো উচিত। জামিনে থাকলে প্রমাণ নষ্ট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সিবিআইর আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার সকালেই চিদাম্বরমের আইনজীবী তাঁর মক্কেলকে তিহার জেলে না পাঠানোর জন্য আবেদন জানান। কিন্তু শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেন, পি চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রমাণ করতে তদন্তকারীদের যথেষ্ট স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। এ মুহূর্তে তাঁর জামিন মঞ্জুর হলে তদন্তের কাজে ক্ষতি হতে পারে। ফলে সুপ্রিম কোর্টও তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই চিদাম্বরমকে নিয়ে যাওয়া হয় তিহার জেলে। জেলে যাওয়ার আগে ভারতের সাবেক এই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত আমি।’
২০০৭ সালে আইএনএক্স সংস্থাকে ৩০৫ কোটি রুপির বিদেশি লগ্নি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পি চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে। ওই সময় তিনি ছিলেন মনমোহন সরকারের অর্থমন্ত্রী ও ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন বোর্ডের চেয়ারম্যান। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, ইন্দ্রাণী-পিটারের এই সংস্থার আর্থিক তছরুপে যুক্ত ছিলেন চিদাম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তি। কার্তি চিদাম্বরমকে ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ২৩ দিন পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।