পার্লামেন্ট প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রুল ভুল ছিল : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে গত মঙ্গলবার বেআইনি ঘোষণা করে রুল জারি করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট৷ এরপর গতকাল বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের (এমপি) উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বরিস জনসন সুপ্রিম কোর্টের রুল ‘ভুল’ ছিল বলে মন্তব্য করেন।

বরিস জনসন বলেন, ‘এ ধরনের (পার্লামেন্ট স্থগিত করা বেআইনি প্রসঙ্গ) বিষয়ে এবারই প্রথম সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে বলা হলো। এবং বিচার বিভাগের প্রতি কোনোরূপ অশ্রদ্ধা না রেখেই বলছি, আমি মনে করি চলমান জাতীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে  সম্পূর্ণ রাজনৈতিক একটি বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এ ধরনের আদেশ দেওয়াটা ভুল হয়েছে।’

এ ছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টের ছোট দলগুলোকে তাঁর সরকারের প্রতি অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব দেওয়ারও আহ্বান জানান। আগাম সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার পথ সুগম করতেই এমন আহ্বান জানান জনসন। এ ছাড়া আগাম নির্বাচনের বিরোধীতা করায় বিরোধী দলীয় নেতা জেরিমি করবিনের সমালোচনা করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।   

এ সময় পার্লামেন্টে এক অভাবনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে স্বাগত জানান বিরোধী দলের এমপিরা।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর জেরেমি করবিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ‘দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার’ কারণে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন।

এ ছাড়া বরিস জনসন আদালতে হেরে যাওয়ার পরও ক্ষমা না চাওয়াও অনেক এমপিই তাঁর সমালোচনা করেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বুধবারের অধিবেশনের কর্মকাণ্ডকে ‘ভয়ংকর দৃশ্য’ হিসেবে অভিহিত করেন লেবার দলের এমপি র্যা চেল রিভস। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে দলের আরেক এমপি জেস ফিলিপস জানান, আদালতের রায়ের প্রতি যে প্রতিক্রিয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তা জনগণের কাছে ‘ভয়ংকর’ বলে মনে হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ব্রেক্সিট ঘিরে অচলাবস্থা কাটাতে বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করে গত মঙ্গলবার রুল জারি করে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট।  এক আদেশে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ওই সিদ্ধান্ত বাতিল এবং এর কোনো কার্যকারিতা নেই। যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের ১১ বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে এ রায় ঘোষণা করেন। স্থগিতাদেশ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হয়েছে।

দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জানায়, আগামী ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ-ব্রেক্সিট কার্যকর করার আগে পার্লামেন্ট স্থগিত করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি   বরিস জনসন।

এদিকে গতকাল বুধবার অধিবেশন শুরুর পর বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার চেষ্টার প্রতিবাদ করেন বিরোধী লেবার পার্টির সদস্যরা।

এরপর রাতেই বরিস জনসন পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন। এর আগে বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।