আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান, এবার ভোট দিলেন অন্য হাতের আঙুলে

Looks like you've blocked notifications!
২০১৯ সালের আফগান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়ে বাঁ হাতের তর্জনীতে কালি মাখানো ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন আফগান ব্যবসায়ী সফিউল্লাহ সফি। আগেরবার ২০১৪ সালে ভোট দেওয়ার দায়ে তাঁর হাতের তর্জনী আঙুল কেটে দেয় তালেবান। ছবি : সংগৃহীত

আগেরবার নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জেরে ডান হাতের তর্জনী কেটে নিয়েছিল তালেবান। পাঁচ বছর ঘুরে আবার দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এসেছে। এবার বাঁ হাতের তর্জনীতে কালি মাখানো ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন ৩৮ বছর বয়সী আফগান ব্যবসায়ী সফিউল্লাহ সফি। গতকাল শনিবার ২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন, আবার অনেকে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বেশ কিছু টুইটার আইডি থেকে তাঁকে আফগান সরকারের সুবিধাভোগী আখ্যায়িত করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ছোটখাটো কয়েকটি হামলা ছাড়া অনেকটা শান্ত পরিবেশেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার উপস্থিতিও ছিল অনেক কম। বর্তমানে যুদ্ধবিধস্ত দেশটির সরকারের চেয়ে বেশি জায়গা তালেবানের দখলে রয়েছে।

২০১৪ সালের ভোটে তালেবান অন্তত ছয়জন ভোটারের আঙুল কেটে নেয়। সে সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় সফি বলেন, ‘ভোটের পরদিন আমি রাজধানী কাবুল থেকে খোস্ত যাচ্ছিলাম। হাতের আঙুলে ভোটের কালি দেওয়া ছিল। তালেবানের লোকজন আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের একটি আদালতে নিয়ে গেল। বলা হলো, মানা করা সত্ত্বেও আমি কেন ভোট দিতে গেলাম।’

সফি আরো বলেন, ‘আমার পরিবারের লোকজনও এবার আমাকে নিষেধ করেছিল। আমি বরং পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েছি।’

সফি বলেন, ‘এটা অনেক বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা ছিল, তা আমি ভালো করেই জানি। তবে সেটি শুধুই একটি আঙুল ছিল। আমার পরিবার, যেখানে সন্তান ও দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্ন আসে, আমি চুপ করে বসে থাকতে পারি না। সে ক্ষেত্রে আমার পুরো হাত কাটা গেলেও যেতে পারে।’

ভোটের ফল প্রকাশের পর সংঘাত আরো বাড়তে পারে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রাথমিক ফল জানা যাবে ১৭ অক্টোবর আর চূড়ান্ত ফল বের হবে ৭ নভেম্বর। কোনো প্রার্থীই যদি ৫১ শতাংশের বেশি ভোট না পান, তাহলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে পুনরায় ভোট হবে।

গতকাল শনিবার ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ‘এবারকার ভোট আগের সব বারের তুলনায় সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ হয়েছে’ বলে দাবি করেন দেশটির স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (আইইসি) প্রধান হাওয়া আলম নুরিস্তানি। যদিও দেশটির বহু ভোটকেন্দ্রে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভোট শুরু হতে দেরি হয় এবং সারা দেশে ভোট গ্রহণের সময় দুই ঘণ্টা বাড়ানো হয়।