অ্যান্টার্টিকায় ভাঙল সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টনের বরফের চাঁই
ভাঙল অ্যান্টার্টিকার অ্যামারি আইস শেলফ থেকে একটি বড় আকারের আইসবার্গ বা বরফের চাঁই ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, গত অর্ধশতকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই শেলফ থেকে এটাই সবচেয়ে বড় আইসবার্গ ভাঙন।
আইসবার্গটির নাম দেওয়া হয়েছে ডি টোয়েন্টি এইট বা ডি২৮। এক হাজার ৬৩৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আইসবার্গটি স্কটল্যান্ডের আইল অব স্কাইয়ের চেয়ে একটু ছোট।
এত বড় একটি আইসবার্গ ভাঙার অর্থ হলো, এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে, কেননা এটি ভবিষ্যতে জাহাজ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
এর আগে ১৯৬০-এর দশকে অ্যামারি আইস শেলফ থেকে নয় হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি আইসবার্গ ভেঙেছিল।
অ্যামারি হলো অ্যান্টার্টিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ আইস শেলফ, যেটি মহাদেশটির পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনেজ চ্যানেল।
এই আইস শেলফ হলো ভূমি থেকে সাগরে ভেসে আসা একাধিক হিমবাহের বর্ধিত ভাসমান অংশ। হিমবাহকে বলা চলে এক ধরনের বরফের ঝর্ণা। আইস শেলফ থেকে আইসবার্গ ভাঙার মাধ্যমে এসব ঝর্ণার ভারসাম্য বজায় থাকে। একদিকে মহাসাগরে আইসবার্গ ভাঙে, আর হিমবাহের ওপরের দিকে নতুন করে তুষার জমতে থাকে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
তাই আইসবার্গ ডি২৮ যে ভাঙবে, সেটি বিজ্ঞানীরা জানতেন। অ্যামারি আইস শেলফের পূর্বদিকের অঞ্চলকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছিলেন ‘লুজ টুথ’ বা ‘নড়বড়ে দাঁত’। বাচ্চাদের দুধ দাঁত যেমন পড়ে যাওয়ার সময় হলে নড়বড়ে হয়ে পড়ে, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে অ্যামারি আইস শেলফের পূর্ব দিকের অংশকে দেখতে অনেক সে রকম মনে হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা এমন নামকরণ করেন।
এত বড় একটি আইসবার্গ খসে যাওয়ায়, অ্যামারি আইস শেলফের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এতে করে আইস শেলফে অস্বাভাবিক চিড় ধরাসহ ‘লুজ টুথ’-এর স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়তে পারে। ডি২৮ আইসবার্গটি প্রায় ২১০ মিটার পুরু। আইসবার্গটিতে অন্তত ৩১৫ বিলিয়ন বা সাড়ে ৩১ হাজার কোট টন বরফ রয়েছে। আইসবার্গের নামকরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আইস সেন্টার।