খেলার মধ্যেই পতাকাবাহী ড্রোন, ক্ষিপ্ত খেলোয়াড়রা

চলছিল ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বের খেলা। মুখোমুখি আজারবাইজানের ক্লাব এফকে কারাবাগ ও লুক্সেমবার্গের এফ ৯১ ডুডেলেঞ্জ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে লুক্সেমবার্গের জোসি বার্থেল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। ঠিকঠাকই চলছিল খেলা। তবে বিপত্তি ঘটে ম্যাচের ৩০তম মিনিটে। ডুডেলেঞ্জের বিপক্ষে তখন ২-০ গোলে এগিয়ে কারাবাগ। ওই সময় হুট করেই লাল, নীল ও কমলা রঙের পতাকাবাহী একটি ড্রোন উড়ে আসে মাঠের ওপরে। ড্রোনের পতাকাটি আর্মেনিয়ার। সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে যায় মাঠ। থেমে যায় খেলা।
মাঠে ঢুকে দুই দলের খেলোয়াড়দের মাথার ওপর দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ওড়ে ড্রোনটি। ওই সময় কারাবাগের মিডফিল্ডার গারা গড়াইভ বলে লাথি মেরে ওপরে উঠিয়ে ড্রোনটি নামানোর চেষ্টা করেন। দেখা যায়, কেউ কেউ প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন মাঠের মধ্যেই। এ সময় অন্তত ১৫ মিনিট খেলা থেমে থাকে। অবাক হয়ে ঘটনাটি বোঝার চেষ্টা করেন ফুটবলপ্রেমীরা। পরে অবশ্য খেলা ভালোভাবেই শেষ হয়। ওই ম্যাচে ডুডেলেঞ্জকে ৪-১ গোলে হারায় কারাবাগ।
ম্যাচ শেষে উয়েফা জানিয়েছে, ওই মুহূর্তে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ম্যাচটি স্থগিত করার কথা ভাবছিল উয়েফা।
ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আজারবাইজানের নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার সহিংসতার কারণে আর্মেনিয়ার পতাকাবাহী ড্রোন ওড়ানো হয়। এ ছাড়া মাঝেমধ্যেই ইউরোপের লুক্সেমবার্গের এ অঞ্চলটিতে এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
নাগরনো-কারাবাখ একটি বিতর্কিত অঞ্চল। এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আশির দশকের শেষদিকে নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বংশোদ্ভূতরা। মাঝেমধ্যেই দুপক্ষের মধ্যে সেখানে সংঘর্ষ বেধে যায়।
নগরনো-কারাবাখে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য ১৯৯৪ সালে ফ্রান্স, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সভাপতিত্বে মিনস্ক গ্রুপ গঠিত হয়েছিল। ওই গ্রুপের বাকি সদস্য দেশগুলো হলো বেলারুশ, জার্মানি, ইতালি, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, তুরস্ক, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।