ভোটে ‘আটকে গেল’ ব্রেক্সিট, সময়ের জন্য ফের ইইউকে চিঠি

Looks like you've blocked notifications!
গতকাল শনিবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে ভোটাভুটিতে চুক্তি সংশোধনীর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ায় বেশ বেকায়দায় পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ছবি : সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের করা ব্রেক্সিট চুক্তি এবার সাময়িকভাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আটকে গেল। গতকাল শনিবার হাউস অব কমন্সে এমন একটি সংশোধনীর ওপর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে সংশোধনীর পক্ষের সংসদ সদস্যরা জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নতুন ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরের তারিখ পেছাতে হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রেক্সিট পেছানো নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসতে পারবেন না তিনি। তাঁর মতে, এ ব্যাপারে সময়ক্ষেপণ করা এক ধরনের ভুল।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর পরে ইইউকে স্বাক্ষরবিহীন এক চিঠির মাধ্যমে ব্রেক্সিট পেছানোর অনুরোধ করেন জনসন।

ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক রাতে এক টুইট বার্তায় ব্রিটেনের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এইমাত্র চিঠি এসে পৌঁছেছে। এখন ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ডোনাল্ড টাস্কসহ অন্যান্য ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বরিস জনসন। পরে দ্বিতীয় দফায় নিজের স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠিতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই চুক্তি সম্পন্ন করার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যের সরকার প্রয়োজনীয় সংশোধনী নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ করবে বলে পরের চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি।

৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট উদ্যোগ নিলে চুক্তিটি ওই তারিখের মধ্যেই করা সম্ভব।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে ৩৭ বছর পর বিশেষ সাপ্তাহিক ছুটির দিন গতকাল শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বসে অধিবেশন। ‘সুপার স্যাটারডে’ খ্যাত এই দিনে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু হাউস অব কমন্সে সংসদ সদস্য অলিভার লেটউইন এমন একটি সংশোধনী তুলে ধরেন, যার কারণে জনসনের নতুন ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরের তারিখ পেছাতে হচ্ছে অনিবার্যভাবে।

পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে সংসদ সদস্যরা ওই সংশোধনী প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেন। এদিন সংশোধনী প্রস্তাবের পক্ষে ৩২২ ও বিপক্ষে ৩০৬ ভোট পড়েছে। ফলে এখন ব্রিটেনের  আইন বিভাগ নতুন ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না করা পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না।

সংশোধনী প্রস্তাবটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উপস্থিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, সরকার আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রস্তাব কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন বিভাগীয় আয়োজন সম্পন্ন করবে। তবে ব্রেক্সিট পেছানো নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে তিনি কোনো ধরনের আলোচনায় বসতে পারবেন না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, নতুন চুক্তির মাধ্যমে ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করলে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুপক্ষের জন্য ভালো হয়। এই চুক্তি পাস করাতে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সোমবার তা আবারও আমি পার্লামেন্টে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। কিন্তু ব্রেক্সিট পেছানো নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হবে না।’

তবে নতুন সংশোধনী প্রস্তাবটি পাস হওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নির্ধারিত ৩১ অক্টোবর তারিখটি তৃতীয় দফায় পেছাতে হবে বরিস জনসনকে।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী পদক্ষেপ খুব দ্রুত জানানোর কথা বলেছে ইউরেোপীয় ইউনিয়ন।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার ক্ষেত্রে নতুন গণভোটের দাবিতে শনিবার লন্ডনে ১০ হাজারের বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।