রাজার সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, স্ত্রীর মর্যাদা খোয়ালেন থাই রাজপত্নী

Looks like you've blocked notifications!

‘রাজার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও বিশ্বাসঘাতকতা’ করার অভিযোগে স্ত্রীর মর্যাদা ও পদবী খোয়ালেন থাই রাজপত্নী সিনিনাত ওংভাজিরাপাকডি।  

থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সিনিনাতকে ‘উচ্চাভিলাষী’ উল্লেখ করে বলা হয়, তিনি ‘নিজেকে রানির সমমর্যাদায় উন্নীত করার’ চেষ্টা করেছিলেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজপত্নীর আচার-আচরণ ছিল অসম্মানজনক।’    

এ ছাড়া সিনিনাত থাই ‘রাজা ও রানির বিরুদ্ধাচারণ’ করছিলেন দাবি করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেই রাজার হয়ে নানা আদেশ দিতেন তিনি।

থাই রাজা চতুর্থবারের মতো বিয়ে করলে রানি হন সুথিডা। এর দুমাস পরেই গত জুলাইয়ে সিনিনাতকে রাজপত্নীর মর্যাদা দেন থাই রাজা।

থাইল্যান্ডের প্রায় ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘রাজপত্নী’ খেতাব পান কোনো নারী। সিনিনাত ছিলেন একাধারে একজন প্রশিক্ষিত বিমানচালক, সেবিকা ও দেহরক্ষী এবং সেনাবাহিনীর মেজর-জেনারেল পদাধিকারী।

আর রানি সুথিডা ছিলেন থাই রাজার দীর্ঘদিনের সঙ্গী। রাজার পাশে সুথিডাকে অনেক বছর ধরে জনসম্মুখে দেখা গেছে। সাবেক বিমানবালা ৪১-বছর-বয়সী সুথিডা ছিলেন থাই রাজা ভাজিরালংকর্নের দেহরক্ষী বাহিনীর উপপ্রধান।

থাইল্যান্ডের রাজকীয় গেজেটে গতকাল সোমবার সিনিনাতকে পদবীচ্যুত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। থাই রাজার পাশে বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাওয়ার পর ‘রাজপত্নী’ হিসেবে মর্যাদাসীন হন সিনিনাত। কিন্তু বেশিদিন সে মর্যাদা ধরে রাখতে পারলেন না সিনিনাত।

থাই রাজা সুথিডাকে বিয়ে করার পরেও সিনিনাতকে রাজকীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা যেত।

থাই রাজার আগের তিন স্ত্রী হলেন — প্রিন্সেস সোয়ামসয়ালি (১৯৭৭ থেকে ১৯৯৩), ইয়ুভাধিডা পোলপ্রাসার্থ (১৯৯৪-১৯৯৬) এবং স্রিরাসমি সুয়াদি (২০০১ থেকে ২০১৪)।

তবে থাই রাজপ্রাসাদের অন্তরালের খবরাখবর রাজনির্দেশ ছাড়া কখনোই প্রকাশিত না হওয়ায়, সিনিনাতের ‘রাজপত্নী’ পদবী খোয়ানোর আসল কারণ সম্পর্কে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। রাজপরিবারের প্রতি কোনো ধরনের অসম্মানজনক আচরণের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার রীতি রয়েছে।

অবশ্য সিনিনাতকে যে ভাগ্যবরণ করতে হয়েছে, তা একেবারেই অভূতপূর্ব নয়। থাই রাজার আগের স্ত্রীদের বেলায়ও এমনটাই ঘটেছে বলে জানা যায়। ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী এবং সে পক্ষের চার পুত্রকে পরিত্যাগ করেন থাই রাজা। ওই স্ত্রী এরপর যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান।

এর পর ২০১৪ সালে থাই রাজার তৃতীয় স্ত্রীকেও সিনিনাতের মতো পদবীচ্যুত করে রাজসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে ওই পক্ষের ১৪-বছরের ছেলেকে জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে রেখে বড় করছেন থাই রাজা।