কুর্দিদের হটাতে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করল তুরস্ক
তুরস্কের সঙ্গে সিরিয়ার সীমান্ত থেকে কুর্দি বাহিনীকে হটাতে একটি চুক্তি করতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও তুরস্ক। এ চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলছে দুই পক্ষ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রাশিয়ার সোচি শহরে এক বৈঠকে উত্তর সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন। দুই নেতা গতকাল মঙ্গলবার টানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করেন। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
চুক্তিতে পুতিন ও এরদোয়ান সিরিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সেইসঙ্গে তাঁরা বলেছেন, সিরিয়ায় যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে। সমঝোতা অনুযায়ী, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় মানবিজ ও তাল-রাফয়াত শহর থেকে কুর্দি গেরিলারা সরে যাবে।
এ ছাড়া চুক্তিতে আরো বলা হয়েছে, আজ বুধবার রাশিয়ার মিলিটারি পুলিশ ও সিরিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনী উত্তর সিরিয়ার যেসব এলাকায় তুর্কি সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে না সেসব এলাকায় প্রবেশ করবে। কুর্দি বাহিনী যাতে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সরে যেতে পারে সে বিষয়টি তদারকি করাই হবে এ পদক্ষেপের লক্ষ্য। এই প্রক্রিয়া ১৫০ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
এ ছাড়া, রাজনৈতিক উপায়ে সিরিয়া সংকট সমাধানের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতেও পুতিন ও এরদোয়ান সম্মত হয়েছেন।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে কুর্দি বাহিনীকে বিতাড়িত করে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলতি মাসের ৯ অক্টোবর সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। এর পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১৭ অক্টোবর থেকে পাঁচদিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তুরস্কের এরদোয়ান সরকার। যুদ্ধবিরতির ওই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই তুর্কি ও রুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যে নতুন করে সমঝোতা হলো।
উত্তর সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তুরস্ক সিরিয়ায় হামলা চালানোর ‘সবুজ সংকেত’ পায় বলে অভিযোগ ওঠে।
সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত রাশিয়া সিরিয়াতে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল। নতুন চুক্তি অনুযায়ী যৌথভাবে সীমান্তে টহল দেবে রাশিয়া ও তুরস্ক।