৬৮ বছরের বন্ধন ছিড়ে তাঁরা ৬৫ জন ভারতে
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ছিটমহলের বাংলাদেশ অংশ থেকে প্রথম দলটি বুধবার দুপুরে ভারতে প্রবেশ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলে যাওয়া ভারতীয় ছিটমহল থেকে ৯৮৭ জন মানুষ ভারতে চলে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ভারতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করা সেই বাসিন্দাদের প্রথম দলটি বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অভ্যন্তরে পা রাখলেন। ৬৮ বছরের বন্ধন ছিড়ে ১৯টি পরিবারের ৬৫ জন মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধ্যা চেকপোস্ট দিয়ে তাঁরা এদিন ভারতীয় সময় দুপুর ২টায় ভারতের মাটিতে পা রাখেন। তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত বরাবর অংশে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে কোচবিহারের জেলা শাসক পি উলগনাথন, মেঘলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারী, জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবি ঘোষসহ একাধিক প্রশাসনিক কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা প্রত্যেককে ফুলের স্তবক হাতে দিয়ে এবং মিষ্টি মুখ করিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
স্থানীয় নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে চলে আসা পরিবারগুলোকে মেঘলিগঞ্জের ভোটবাড়ি এলাকায় প্রাথমিকভাবে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা বাসিন্দাদের দিনহাটা এবং হলদিবাড়িতেও রাখা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখছি। তবে বাসিন্দাদের কোনো রকম অসুবিধা হলে আমরা তাদের পাশে থাকব।’
কোচবিহারের জেলা শাসক পি উলগনাথন জানান, ‘যাঁরা এ দেশে আসছেন তাঁদের যাতে কোনোরকম অসুবিধা না হয় সেদিক প্রশাসন নজর রাখছে। তাদের ভালোভাবে খাবার দাবার পৌঁছে দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হবে। আপাতত টিনের বেড়া দেওয়া ছোট ছোট ঘরে দিন কাটবে বাংলাদেশ থেকে চলে আসা বাসিন্দাদের।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বাসিন্দাদের বিভিন্ন পুনর্বাসন কেন্দ্রে দুই বছর রাখা হবে। তার মধ্যেই তাঁদের জন্য পাকাপাকি থাকার বন্দোবস্ত করবে সরকার। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বাসিন্দাদের জন্য প্রথম এক মাস খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। এরপর তাদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তবে এদিন পাকাপাকিভাবে ভারতে চলে আসা বাসিন্দারা শুভেচ্ছা আর এখানকার বাসিন্দাদের ভালোবাসায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
কোচবিহার জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, খুব শিগগিরই বাকি দলগুলোও বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসবে।