গৃহপরিচারিকার মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনা করবে সৌদি আরব

Looks like you've blocked notifications!
সৌদি আরবে গৃহকর্মীকে পাথর ছুড়ে হত্যার রায়ের প্রতিবাদে শ্রীলংকার মানবাধিকারকর্মীরা কলম্বোয় জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। ছবি : বিবিসি

ব্যাভিচারের দায়ে শ্রীলংকার এক গৃহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দেশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অনুরোধে মামলাটি পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হয়েছে সৌদি আরব। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ওই গৃহপরিচারিকার দুই সন্তান আছে বলে জানায় শ্রীলংকা কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছরের এপ্রিলে ৪৫ বছর বয়সী ওই গৃহপরিচারিকাকে আরেক অবিবাহিত শ্রীলংকান যুবকের সাথে এক ঘরে পাওয়ার পর আগস্টে দুজনকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সেই সময় সৌদির বিচারে মহিলাকে পাথর ছুঁড়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার আদেশ দেওয়া হয়। অপরদিকে অভিযুক্ত শ্রীলংকান যুবককে ১০০টি দোররা মারার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সৌদি বিচার বিভাগের এই রায়ের পরই শ্রীলংকায় রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো। শ্রীলংকার মানবাধিকারকর্মীরা কলম্বোয় জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। এরপর গত রোববার শ্রীলংকার দূতাবাসের প্রতিনিধি সৌদি আরবের জেলে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করেন এবং বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। গতকাল সোমবার দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হার্শা ডি সিলভা জানান, সৌদি সরকারের কাছে দুজনের শাস্তি মওকুফ করার অনুরোধ জানিয়েছে শ্রীলংকা এবং আমাদের অনুরোধের পর সৌদি বিচার বিভাগ, মামলাটি পুনর্বিবেচনায় সম্মতি জানিয়েছেন।

শ্রীলংকার আরেক সহকারী মন্ত্রী রঞ্জন রামানায়েকে বিবিসিকে জানান, চলতি বছরের আগস্টে ওই গৃহপরিচারিকাকে দোষী সাব্যস্ত করার পর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু ওই নারীকে এপ্রিলেই গ্রেপ্তার করে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল।

রঞ্জন রামানায়েকে আরো বলেন, ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে চারজন ‘সম্মানিত মুসলমান’ প্রত্যক্ষদর্শী লাগে। কিন্তু এই মামলার বিচারের ক্ষেত্রে এই বিষয় প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় এই, কোনো আইনি সাহায্য ছাড়াই ওই গৃহপরিচারিকা চাপের মুখে ব্যাভিচারের বিষয়টি সৌদি আদালতে স্বীকার করে নিয়েছেন।

এদিকে এই ‘মানবেতর ও ঘৃণ্য’ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রীলংকার মানবাধিকারকর্মীরা দেশটিতে অবস্থিত জাতিসংঘ কার্যালয়ের বাইরে প্রতিবাদ করেছে। এ সময় প্রতিবাদকারীরা সৌদি আরবে শ্রীলংকার কর্মী পাঠানো বন্ধ করারও দাবি জানায়। এদিকে শ্রীলংকার সরকার জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিক পাঠানো ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনা হচ্ছে।