উত্তর কোরিয়ার বিস্ফোরণে কেঁপেছে চীনের সড়ক!
হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে বলে গতকাল বুধবার দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। আর এই পরীক্ষার কারণে চীনের বেশ কয়েকটি স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সেই কম্পনের ভিডিও প্রকাশ করেছে বেইজিং! যদিও চীনের এই এলাকাগুলো উত্তর কোরিয়ার বিস্ফোরণস্থল থেকে অন্তত ১০০ মাইল দূরে অবস্থিত।
উত্তর কোরিয়ার চালানো এই পরীক্ষার কারণে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। চীনের পূর্বাঞ্চলের ইয়ানজি প্রদেশের একটি মহাসড়কে ভূমিকম্পের সময়কার একটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, বিস্ফোরণের ফলে পুরো এলাকাটি কাঁপছে। এমনকি ওই এলাকার অনেক খেলার মাঠে ফাটলও দেখা গেছে। ভূমিকম্পের সময় আশপাশের সব ভবন থেকে নিচে নেমে আসেন সেখানকার বাসিন্দারা।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চীনের সীমান্ত থাকা ইয়ানজি, হুইছুন ও চ্যাংবাই প্রদেশগুলোতে কম্পন সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় বর্ষণ করা অ্যাটম বোমার চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটায় হাইড্রোজেন বোমা।
অবশ্য উত্তর কোরিয়ার দাবি নিয়ে অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিস্ফোরক ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ক্রিসপিন রোভারে বলেন, হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে যেমন ভূকম্পন হয়, ঠিক তেমনটিই দেখা গেছে উত্তর কোরিয়ায়। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দেশটি দ্বিতীয় মাত্রার হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থাকতে পারে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ উত্তর কোরিয়ার দাবি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ব্রুস বেনেট বলেন, উত্তর কোরিয়ার বোমাটি হয়তো হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের আণবিক বোমার সমান হতে পারে। তবে এটি কোনোভাবেই তেমন শক্তিশালী নয়। এটি পূর্ণশক্তির হলে ১০ গুণ জোরে ভূকম্পন হতো।
এদিকে, ভূমিকম্প হলেও হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ লক্ষ করা গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে টেলিভিশনে হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণের খবর শোনেন তাঁরা। এ সময় হাত উঁচিয়ে, হর্ষধ্বনি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন দেশটির নাগরিকরা। একে তাঁরা ২০১৬ সালের শুভসূচনা বলেও মন্তব্য করেন। এ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া নিজেদের অন্য মাত্রায় নিয়ে গেল বলে দাবি দেশটির কর্তৃপক্ষের। এক বার্তায় উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন বলেন, ‘বিশ্বকে একটি শক্তিশালী, আত্মনির্ভরশীল এবং পারমাণবিক অস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ দেখতে দাও।’