‘আম্মা’র বাড়ির সামনেই বিজয়মঞ্চ

ভারতের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পরবর্তী বেশির ভাগ হিসাবনিকাশই বলেছিল, তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় ফিরছে ডিএমকে। বলেছিল, অশীতিপর করুণানিধির সুযোগ্য পুত্র স্টালিনের জয়ললিতার মতো বাচনশৈলী হয়তো নেই কিন্তু দলের হয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রমে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু ইভিএম ভোটবাক্স খুলতে দেখা গেল, বোদ্ধারা নন, গণতন্ত্রে শেষ কথা বলেন মানুষই। আর সেই মানুষের বিশ্বাসে ভর করেই তামিলভূমিতে ফের ক্ষমতায় ফিরলেন জয়ললিতা জয়রাম।
তামিলনাড়ুতে ২৩৪টি আসনের মধ্যে ২৩২টির যা ফল পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ডিএমকেকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দিয়ে ১২৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে জয়ললিতার এআইএডিএমকে।
এদিকে ভোটের ফল সামনে আসতে শুরু হওয়ার আগেই জয়ললিতার পোয়েস গার্ডেনের বাসভবনে বাড়তে থাকে এডিএমকে সমর্থকদের ভিড়। প্রথমদিকে তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন নিজের নিজের স্মার্ট ফোনে, ভোটের খবর জানতে। সময় যত এগিয়েছে, তত আনন্দে ফেটে পড়েছেন সমর্থকরা। আম্মার বাড়ির সামনেই বিজয় উৎসবে মাতেন তাঁরা।
জয়ললিতা নিজে জিতেছেন আরকেপুরম কেন্দ্র থেকে। ডিএমকে- কংগ্রেস জোট অনেক পিছিয়ে, পেয়েছে মাত্র ১০৭টি আসন। তামিলনাড়ুতে এবারের ভোটেও আসনের খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি, তবে ভোটের শতাংশ বেড়েছে। অন্যরা পেয়েছে দুটি আসন।
বোদ্ধারা এবার বলছেন, ২৭ বছর পর ফের বদলেছে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক সমীকরণ। ১৯৭৭-৮৭- এ রাজ্যে ক্ষমতায় ছিলেন এডিএমকে প্রতিষ্ঠাতা এম ডি রামচন্দ্রন, সংক্ষেপে এমজিআর। তারপর শেষ ২৭ বছরে তামিলরা কোনো এক দলকে পরপর দুবার বসায়নি মসনদে।
একবার ক্ষমতায় এসেছে ডিএমকে তো পরেরবারই এডিএমকে সরিয়ে দিয়েছে তাদের। এবার কিন্তু উল্টে গেল সব হিসাবনিকাশ। গতবারের মতো এবারও আম্মা দখলে করলেন তামিলনাড়ুর সিংহাসন। আর ৯১ বছরের করুণানিধির এবারেও সঙ্গী হলো হতাশা।
জয়ের পর দৃশ্যতই খুশি আম্মার মন্তব্য, তামিলনাড়ুর রায় ডিএমকের পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে। এই জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।