বাদুড়ের দখলে অস্ট্রেলিয়ার শহর!

Looks like you've blocked notifications!
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথওয়েলস প্রদেশের বেটম্যানস বে শহরের গাছে ‘গ্রে হেডেড ফ্লাইং ফক্স’ জাতের বাদুড়। ছবি : আইবিটাইমস ডটকম

বিখ্যাত আইরিশ লেখক আব্রাহাম ব্রাম স্ট্রোকারের লেখা কাউন্ট ড্রাকুলার উপন্যাসটি নিশ্চয়ই অনেকের পড়া। বিশ্বের সর্বাধিক পঠিত  ভয়ের উপন্যাসগুলোর অন্যতম ওই বইয়ের গল্পে বর্ণনা আছে কীভাবে লাখো বাদুড়রূপী ‘ভ্যাম্পায়ার’ আক্রমণ করেছিল মানুষের শহরকে। এবারে প্রায় একইরকম ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথওয়েলস প্রদেশের বেটম্যানস বে শহরে। বন থেকে লাখে লাখে বাদুড় এসে আস্তানা গেড়েছে শহরটিতে।

যুক্তরাজ্যের দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা জানিয়েছে, বাদুড়ের অত্যাচারে দিশেহারা বেটম্যানস বে’র মানুষের জীবন। পূর্ব উপকূলের এই ছোট্ট শহরটিতে মানুষের সংখ্যা ১১ হাজারের সামান্য বেশি আর বাদুড়ের সংখ্যা অন্তত এক লাখ। তাদের ডানা ঝাপটানির চোটে মানুষ আক্ষরিক অর্থেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

ছোট্ট এই শহরের প্রতিটি গাছ, এমনকি বাড়িঘরেও বাসা বেঁধেছে বাদুড়ের দল। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছে বাসিন্দারা। অবস্থা এমন যে শহরের প্রায় সব বাড়ির ছাদে, সব গাছে জেঁকে বসেছে ধূসর রঙের ‘গ্রে হেডেড ফ্লাইং ফক্স’ নামের এক জাতের বাদুড়।

ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ‘গ্রে হেডেড ফ্লাইং ফক্স’ জাতের বাদুড় সাধারণত ৯ থেকে ১১ ইঞ্চি লম্বা হয়, ওজন হয় ১ কেজির মতো। দুই পাশে ডানা মেলে ধরতে পারে ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত।

আর বড় এই বাদুড়গুলোর জন্য বাড়ির জানলা খোলা যাচ্ছে না, বাইরে যাওয়াও হয়ে উঠেছে প্রায় অসম্ভব। নিজেদের বাড়িতেই কার্যত বন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। ‘সংখ্যালঘু’ হয়ে পড়া মানুষরা এখন তাই প্রতিকার চাইছে।

শহরটির প্রশাসন বাধ্য হয়ে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করেছে। বাদুড় তাড়ানোর উপায় খোঁজা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুসারে গ্রে হেডেড ফ্লাইং ফক্স জাতের বাদুড় বিপন্ন প্রাণী। তাই প্রশাসনের লোকেরা এদের শিকার করতে পারবে না। একমাত্র তাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাই ধোঁয়া ও শব্দের মাধ্যমে বাদুড়গুলোকে শহর ছাড়া করার উপায় খুঁজছে প্রশাসন। আরেকটা উপায় ভাবা হচ্ছে, স্থানীয় সব শস্যক্ষেত নষ্ট করা। এরই মাঝে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।

দেশটির পশুপ্রেমী সংগঠনগুলো অবশ্য ধৈর্য ধরার কথা বলছে। তাদের দাবি, কোনো কারণে ওই শহরে বাদুড়ের দল বাসা বেঁধেছে। তারা কিছুদিন পরই অন্য জায়গায় চলে যাবে। তবে স্থানীয় মানুষ আর ধৈর্য ধরে থাকতে নারাজ। তারা খুব দ্রুত এই আতংকজনক পরিস্থিতির সমাধান চায়।