আর্মেনিয়ায় ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে তুরস্ক

Looks like you've blocked notifications!
জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে তুরস্কের অটোম্যান সাম্রাজ্যের পরিচালিত হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিল পাসের প্রাক্কালে। ছবি : রয়টার্স

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আর্মেনীয়দের ওপর তুরস্কের অটোম্যান সাম্রাজ্যের পরিচালিত হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে একটি প্রস্তাব পাস হতে যাচ্ছে। তুরস্ক এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জার্মানি থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। দেশটির দাবি, এতে জার্মানির সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

১৯১৪ সালে জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরির পক্ষ নিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয় তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্য। সেই সময় আর্মেনীয়রা অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। যুদ্ধ চলাকালে অটোমান সাম্রাজ্য আর্মেনীয়দের ‘ঘরের শত্রু’ বলে প্রচারণা চালায়।

আর্মেনিয়ার দাবি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ১৫ লাখ আর্মেনীয়কে হত্যা করে তৎকালীন অটোম্যান সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত তুরস্ক।

সে সময় নৃশংসভাবে দেশটির প্রায় দেড় হাজার মানুষকে একই দিনে ক্রশে ঝুলিয়ে হত্যার ছবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে।

আর্মেনীয়রা দীর্ঘদিন থেকে ওই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য চেষ্টা করে আসছে। তবে কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, এটি তুরস্কের কাছ থেকে আর্মেনিয়ার ক্ষতিপূরণ আদায় এবং সম্ভাব্য ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের একটি কৌশলের অংশ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিশ্বের কিছু দেশ জাতিসংঘের কাছে অভিযোগ করে আসছিল। তবে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে তুরস্ক বলেছিল, সংখ্যাটা অনেক বাড়িয়ে বলা হচ্ছে।

এই বিষয়ে তুরস্কের দাবি, একটি সুনির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে হত্যাযজ্ঞ চালালে সেটাকে গণহত্যা বলা হয়। দেশটির দাবি, সে সময় একটি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আর্মেনিয়াকে লক্ষ্য করে গণহত্যা চালানো হয়নি।

এ ছাড়া অটোমান সাম্র্যাজ্যের পতনের সময় তুরস্কের বহু নাগরিকও হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন বলে যুক্তি দেওয়া হয়।

তবে শুরু থেকেই ইউরোপের দেশগুলো এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছিল। জার্মানির আগে ফ্রান্স, রাশিয়া, স্পেনসহ বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশ এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এ হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে বর্তমান পোপ ফ্রান্সিসও রয়েছেন।