যুক্তরাজ্য ছাড়তে চায় স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড!

Looks like you've blocked notifications!
স্কটল্যান্ডে ব্রেক্সিট ভোটের রায়ের বিরেুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি : ডেইলি মেইল

গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ব্রিটিশদের জনরায় নিশ্চিত হওয়ার পর যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। ক্ষমতাসীন দলগুলোর বরাতে এরই মধ্যে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের সিন ফেইন দল শিগগিরই বিবৃতির মাধ্যমে ব্রিটেন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাবে।

ব্রেক্সিট ভোটে দেখা গেছে, ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে বিপুল হারে ভোট দিয়েছেন উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের ভোটাররাই। অপরদিকে ইংল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের জনতার রায় ছিল ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে।

গোটা ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন ডেভিড ক্যামেরন। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই পদ ছাড়বেন তিনি।

এদিকে ফলাফলের পরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এই দুটি স্থায়ত্ত্বশাসিত ভূখন্ডে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকলেই স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করছেন দেশ দুটির বড় অংশই।

আর তাঁদের এই মতামতের প্রতিফলন হয়েছে ভোটের ফলাফলেও। ব্রেক্সিট ভোটে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৫৫.৮ শতাংশ মানুষ। আর বিপক্ষে ভোট ৪৪.২ শতাংশ মানুষের। স্কটল্যান্ডের ক্ষেত্রে জনরায় আরো সুস্পষ্ট। স্কটল্যান্ডের মোট ভোটারের ৬২ শতাংশ ইইউতে থাকতে চেয়ে ভোট দেয়। আর থাকতে চায়নি ৩৮ শতাংশ।

এদিকে গণভোটের রায়ের পর আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক দল সিন ফিন নিজেদের বক্তব্যে জানিয়েছে, আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার এবং ক্ষমতাসীন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) নেত্রী নিকোলা স্টার্জন জানিয়েছেন, স্কটল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকতে চেয়েই ভোট দিয়েছে। কারণ স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নেই রয়েছে।

স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন দলের এই নেত্রী জানান, গণভোটে স্কটল্যান্ডের ৩২টি এলাকাতেই জনগণ ইইউতে রয়ে যাওয়ার পক্ষে বেশি ভোট দেন। এসএনপির পক্ষে ইতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছে, তারই প্রতিফলন এটি। স্কটল্যান্ডের মানুষ এ ইতিবাচক বার্তায় সাড়া দিয়েছে।

নিকোলা স্টার্জন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়া বা বেরোনো নিয়ে হওয়া গণভোটে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারাও ভোট দিয়েছেন। কারণ এঁদের নিয়েই গঠিত যুক্তরাজ্য বা গ্রেট ব্রিটেন। তবে স্কটিশ ও আইরিশরা বেশির ভাগ ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলেও উল্টো ভোট দিয়েছেন ইংল্যান্ডবাসী।

‘আর এই ভোটের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট ঠিক কী চাইছে স্কটল্যান্ডের মানুষ। কারণ ইইউতে থাকতে চেয়ে সবচেয়ে বেশি ভোট স্কটল্যান্ডের মানুষই দিয়েছে। পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডও ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষেই বেশি করে ঝুঁকছে বলে উঠে এসেছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এর আগে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার বলেছিলেন, স্কটল্যান্ডের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে যদি যুক্তরাজ্য ইইউ ছেড়ে চলে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়, তবে স্বাধীনতার দাবিতে দ্বিতীয় গণভোট ঠেকানো অসম্ভব হয়ে উঠবে। এর আগে ২০১৪ সালে একবার স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার বিষয়ে গণভোট হয়েছিল। সেবার অবশ্য ভোটাররা ব্রিটেনে থাকার পক্ষেই ভোট দিয়েছেন বেশি।

এদিকে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের অনেক জায়গাতেই ইইউ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষের রায়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইইউতে থাকার পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন।