এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদন

ওমানে বাংলাদেশিদের দাসত্ব

Looks like you've blocked notifications!
ওমানে বাংলাদেশের অনেক গৃহকর্মী দাসত্বের জীবনযাপন করছেন বলে হিউম্যান রাইট ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

ওমানে অন্তত এক লাখ ৩০ হাজার বিদেশি গৃহকর্মী দাসত্বের জীবনযাপন করছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি। এসব গৃহকর্মীর নির্যাতনের খবর প্রকাশ হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইট ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) আজ বুধবার ‘আমাকে বিক্রি করা হয়েছিল : ওমানে বিদেশি গৃহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন’ শিরোনামের ৬৮ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।  

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় নির্দিষ্ট আইন না থাকায় শ্রমিকরা নিয়োগকর্তাদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে বিদেশে গৃহকর্মী হতে বাধ্য হচ্ছে। এরপর তাদের অনেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

ওই প্রতিবেদন তৈরির আগে ওমানে কাজ করা ৫৯ জন বিদেশি শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছে এইচআরডিব্লিউ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমানে কাজ করা গৃহকর্মীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন তাঁদের জোরপূর্বক অথবা অপহরণ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতসংলগ্ন সীমান্ত থেকে অপহরণ করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করা এইচআরডব্লিউর গবেষক রত্না বেগম বলেন, ‘ওমানে অভিবাসী গৃহকর্মীদের ভালো-মন্দ তাদের গৃহকর্তাদের দয়া-দাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে। গৃহকর্মীদের কোনো বেতন, বিশ্রাম ও খাদ্য না দিয়েই জোরপূর্বক কাজ করান গৃহকর্তারা। আর কোনো কর্মী পালাতে চাইলে তাঁদের ধরে নিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়। তবে এসব কারণে খুব কমই গৃহকর্তাদের শাস্তি বা জরিমানা করা হয়। 

গৃহকর্মীদের অনেকে জানান, ওমানের গৃহকর্তারা গৃহকর্মীদের কোনো মাসেই তাঁদের পুরো বেতন দেন না। বরং কোনো বিরতি বা ছুটি না দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করেন। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য দেওয়া হয় না। এ ছাড়া তাঁদের থাকার জায়গাটির অবস্থাও ভালো না।

এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমানে কাজ করা কোনো কোনো গৃহকর্মী জানিয়েছেন তাঁদেরকে গৃহকর্তারা শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাঁদের যৌন নির্যাতনও করেন  গৃহকর্তারা।

বাংলাদেশের নাগরিক আসমা এইচআরডব্লিউকে জানিছেন, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর নিয়োগ প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাঁর পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে ওমানে বিক্রি করে দিয়েছিল। ১৫ সদস্যের পরিবারে তাঁকে টানা ২১ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। তাঁকে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হতো না। পর্যাপ্ত খাদ্য দেওয়া হতো না। কথায় কথায় তাঁকে গালি দেওয়া হতো। মাঝে মাঝে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হতেন বলে জানান।