যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ নিয়ে শুনানিতে যা হলো
যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে হয়ে যাওয়া শুনানিতে জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গ বেশ গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়েছে। দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে জোর দাবি উঠেছে।
পাঠকদের জন্য সেই শুনানির বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। শুনানি শুরুতেই কমিটির চেয়ারম্যান, মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ম্যাট সলমন বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি ধারণা দেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে চলা উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক, হরতাল-অবরোধে সহিংসতার বর্ণনা দেন।
সলমন বলেন, ‘২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচন পদ্ধতিতে বেশকিছু পরিবর্তন আনে। যার কারণে বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে এবং এর পর থেকেই শুরু হয় সহিংস পরিস্থিতি। বাংলাদেশ এখন গুরুতর রাজনৈতিক নিরাপত্তা সংকটে ভুগছে। বিএনপি কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া সিটি নির্বাচনও বর্জন করে। নির্বাচনে ভোট কারচুপি, ভীতিপ্রদর্শন ও সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস হতাশা প্রকাশ করেছে। এ ধরনের ঘটনা দেশটিতে ইসলামী জঙ্গিদের বেড়ে ওঠার জন্য পথ তৈরি করে দিতে পারে কিংবা সামরিক বাহিনী আবারও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।’
শুনানিতে উপস্থিত ব্যক্তিদের লিখিত বক্তব্য নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের কাছে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ধর্মীয় উগ্রবাদ সম্পর্কে জানতে চান কমিটির চেয়ারম্যান। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও সম্পর্ক সমিতির সভাপতি মার্কিন নাগরিক স্টিভেন ডি ফ্লেচলির কাছে ম্যাট সলমন জানতে চান বাংলাদেশের ব্যবসার পরিস্থিতির কথা।
জবাবে ফ্লেচলি গত কিছুদিনের হরতাল-অবরোধে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষতির কথা জানান। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। রাজনৈতিক সংকটের কারণে বহু কারখানা বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল ছোট অনেক দোকানও। কারণ পরিবহন সমস্যার কারণে কোনো পণ্য দোকান পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারছিল না। শিগগিরই যদি বাংলাদেশের পরিস্থিতি উন্নত করার চেষ্টা না হয়, তাহলে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে না দেশটি।
এ সময় দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এশিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের জ্যেষ্ঠ গবেষক লিসা কার্টিস বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে। গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সম্প্রতি সহিংসতার জন্য তাদের দায়ী করা হচ্ছে। সহিংসতার বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
লিসা কার্টিস মনে করেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিচ্ছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করতে ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলোর উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করছে। এসব রোধে যুক্তরাষ্ট্রকে আরো সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।’
প্রায় একই রকম মত দিয়েছেন হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পরিচালক চে কানসারা। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য প্রাথমিকভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটই দায়ী। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের বিভ্ন্নি কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বাংলাদেশে দল দুটি অবৈধ ঘোষণার পক্ষে মত দেন তিনি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যেন জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বিদেশি জঙ্গি সংগঠন (এফটিও) হিসেবে ঘোষণা করে সেই পরামর্শও দেন তিনি।
গত ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিষয়ে কংগ্রেসের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সাব-কমিটি এ শুনানি করে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্যই এই শুনানির আয়োজন করা হয়। এ সময় সাব-কমিটির চেয়ারম্যান রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ম্যাট সলমনসহ আরো উপস্থিত ছিলেন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ, বাংলাদেশে ব্যবসা করা মার্কিন নাগরিক ফ্লেচলি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের সিনিয়র ফেলো এলিসা আয়ার্স।
নিজের বক্তব্যে চে কানসারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য প্রাথমিকভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, এই জোটটি সাম্প্রতিক সময়ে হরতাল-অবরোধের নামে রাজপথে সহিংসতা, গণপরিবহন চলাচলে বাধা ও পেট্রলবোমা হামলা করা, জোর করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। আর এসবই করা হয়েছে বর্তমান সরকারকে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে ফেলার জন্য।
এ সম্পর্কে কিছুদিন আগে তাঁর বাংলাদেশ সফরের কথাও তুলে ধরেন কানসারা। সে সময় বিভিন্ন সংস্থা, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, সুশীলসমাজের সঙ্গে কথা বলে দেশটিতে ধর্মভিত্তিক আক্রমণের ব্যাপারে জেনেছেন বলেও জানান তিনি। সফরে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশির সাথে কথা বলার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে যথাক্রমে অবৈধ সংগঠন এবং বিদেশি জঙ্গি সংগঠন (এফটিও) হিসেবে ঘোষণা করবে।
এ ছাড়া জামায়াতের যেকোনো সদস্য যদি যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করার মতো সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পরিচালক। এ ছাড়া জামায়াতের যেসব সদস্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যদি সহিংসতার অভিযোগ থাকে তবে তার তদন্তেরও দাবি জানান তিনি।
নিজের নয় পৃষ্ঠার বক্তব্যে লিসা কার্টিজ বাংলাদেশের রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। নির্বাচন, সেনাশাসন, যুদ্ধাপরাধের বিচার, জামায়াতের রাজনীতিসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ এসেছে তাঁর বক্তব্যে। লিসা জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি এটাও বলেছেন যে, বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে দলটির সমর্থকদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। জামায়াতের ছাত্রসংগঠনের দেশজুড়ে শাখা আছে এবং এখান থেকেই রাজনৈতিক দলটির জন্য সদস্য নির্বাচন করা হয়। যদিও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং সহিংসতা সৃষ্টির জন্য এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
লিসা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার জন্যও জামায়াতে ইসলামী দায়ী। বিশেষ করে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এরা বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বীর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যখন এরা জোটবদ্ধভাবে ক্ষমতায় ছিল তখন তারা আহমদিয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায় এবং সরকারিভাবে এদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও তোলে।
সবশেষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন লিসা। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি এ রকম রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সড়কে সহিংসতা চলতে থাকে, তাহলে ২০০৭ সালের মতো বাংলাদেশে আবারও সামরিক অভ্যুত্থান হতে পারে। আর যদি তাই হয়, তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলকেই ভোগান্তিতে পড়তে হবে। আর এই ফলাফল রোধে যুক্তরাষ্ট্রকে সমমনা গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথাও বলেছেন তিনি। যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশ যারা শেখ হাসিনাকে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা কমাতে ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে রাজি করাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত ও শিবির বাংলাদেশের মাটিতে খুব দ্রুত তাদের বিস্তার ঘটিয়েছে মন্তব্য করে হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পরিচালক কানসারা বলেন, যদিও তারা সংখ্যায় খুব বেশি নয়, তবু বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, আইনগত এবং ধর্মীয় বিষয়ে এরা বেশ প্রভাব বিস্তার করেছে। সেই সঙ্গে ক্রমাগত সহিংসতা, বোমাবাজি, রাজনৈতিক হত্যা এবং নিজেদের লক্ষ্য পূরণে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে সংগঠনটি। এ ছাড়া সংখ্যালঘু, নাস্তিক ও নারীদের অধিকারকে খর্ব করে নিজেদের একটি তাত্ত্বিক মতবাদও তৈরি করছে এরা।
এমনকি জামায়াতের মতাদর্শে বিশ্বাসী জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের মতো বেশকিছু জঙ্গি সংগঠনও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জামায়াতের ভয়াবহতা বোঝাতে কানসারা সদ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
চে কানসারা বলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে নিজের শেষ ইচ্ছা প্রসঙ্গে কামারুজ্জামান বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী শক্তির প্রভাব এবং ইসলামী শাসন দেখতে চান।
তাই যতদিন পর্যন্ত জামায়াতসহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে বাংলাদেশে মুক্তভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত হিন্দুসহ অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং নাস্তিক ব্যক্তিরা বাংলাদেশে ঝুঁকির মধ্যে বাস করবেন বলেও মত দেন তিনি।
নিজের বক্তব্যের পক্ষে কানসারা বলেন, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে উচ্চপর্যায়ের জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের সাজা দেওয়ার পর থেকে এই দলগুলোর নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে সহিংসতা চালাতে থাকে। সে সময় বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে সহিংসতা চলতে থাকে, এর ফলে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ও আরো বহু আহত হয়। জামায়াত ও শিবির বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে বোমা বিস্ফোরণ করতে থাকে। এ সময় বাংলাদেশের হিন্দ্র সম্প্রদায়ের ৪৭টি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ৭০০ থেকে এক হাজার ৫০০ বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এমনকি সে সময় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও উদ্বেগ জানিয়ে বলে যে, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
একইভাবে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরেও জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা দেশটির হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে। হিন্দুদের মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া, বাড়িতে আগুন দেওয়া, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুট করার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হিন্দু নারীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণও করে।
সবশেষে কানসারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কিছু সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা সহিংসতার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার যেন জামায়াত-শিবিরকে অবৈধ সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সে ব্যাপারে জোরালো মত দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে জামায়াত-শিবির যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন পরিপেক্ষিতে মার্কিন আইনের কয়েকটি ধারা অনুযায়ী এদেরকে ফরেন টেরোরিস্ট অরগানাইজেশন (এফটিও) ঘোষণা করারও সুপারিশ করেন তিনি।
সেই সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও দূতাবাসসহ সরকারি কর্মকর্তাদের জোরালোভাবে জামায়াত ও শিবিরের এসব সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানোরও আহ্বান জানিয়েছেন কানসারা।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে লিসা কার্টিজ বলেন, বিরোধী দলের সহিংসতার সমালোচনা করার সঙ্গে এটাও বলতে হবে যে সরকার বিরোধী পক্ষকে রাজনীতি করার জন্য পর্যাপ্ত স্থান দেয়নি। বিরোধী দলের হাজারো নেতা-কর্মীকে ছেড়ে দিতে অথবা তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চাপ দিতে হবে। পেট্রলবোমা হামলা করে নিরীহ মানুষদের হত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদেরও যথাযথ সাজা দিতে হবে। এ ছাড়া বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশ করতে হবে এবং তাঁ খুঁজে বের করে নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানাতে হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে শেখ হাসিনার সরকারকে মার্কিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়ানোর শর্তও যুক্তরাষ্ট্র দিতে পারে বলে পরামর্শ দেন লিসা কারটিস।
শুনানিতে অধ্যাপক আলী রিয়াজ শুধু লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এতে বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার জন্য বেশ কিছু বিষয় জরুরি। এর মধ্যে রয়েছে অধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা, জনমতের সঠিক প্রতিফলনের জন্য একটি ব্যবস্থা তৈরি, সব দলের জন্য রাজনৈতিক মত প্রকাশ ও কর্মকাণ্ডের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ রাষ্ট্রের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অবসান, সহিংসতা বন্ধ করার কথা বলেন তিনি।
শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।