ইউরোপ সীমান্তে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন রাশিয়ার

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার বিখ্যাত ইস্কান্দার মিসাইল স্থাপন করা হয়েছে কালিনিনগ্রাদ সীমান্তে। ছবি : আল-জাজিরা

ইউরোপ সীমান্তবর্তী কালিনিনগ্রাদ এলাকায় পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইস্কান্দর’ মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ফলে এই সীমান্তবর্তী ন্যাটো জোটভুক্ত দুই দেশ পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

এই ঘটনায় রাশিয়ার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পোল্যান্ড সরকার। এই ঘটনাকে ‘বিপদসংকেতপূর্ণ’ বলে মনে করছে তারা। অন্যদিকে লিথুয়ানিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তির লঙ্ঘন।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিনাস লিংক্যাভেচুস গত শনিবার বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর অনুমোদন পাওয়ার লক্ষ্যেই মূলত রাশিয়া এই মিসাইল বসিয়েছে। সিরিয়া নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে দেবে রাশিয়ার এই পদক্ষেপ।

লিনাস লিংক্যাভেচুস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘কালিনিনগ্রাদ সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মহড়া এবং ইস্কান্দার মিজাইল স্থাপন করে তা ব্যবহারের বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।’

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা জানিয়েছে, পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার এই উদ্বেগকে নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে মিসাইলের বহরকে এখান থেকে ওখানে সরানো হয়। এবার রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য এসব মিসাইলকে কালিনিনগ্রাদ সীমান্ত এলাকায় নেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু না।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ এক ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, সারা দেশেই সামরিক বাহিনীর জন্য নানা ধরনের প্রশিক্ষণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। কালিনিনগ্রাদও এর ব্যতিক্রম নয়। ইস্কান্দার মিসাইলের কর্মক্ষমতা পরিমাপ করে দেখার জন্যই এটিকে ওই সীমান্ত এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও বাল্টিক সাগরের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত কালিনিনগ্রাদের অবস্থান রাশিয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে এবং দেশটির সবচেয়ে পশ্চিমাংশের এলাকা।

এর আগে ২০১৫ সালে পশ্চিমের সঙ্গে উত্তেজক পরিস্থিতি চলাকালে কালিনিনগ্রাদে ইস্কান্দার মিসাইল পাঠিয়েছিল মস্কো।

সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের হাসপাতালে বোমাবর্ষণের দায়ে গত শুক্রবার রাশিয়া ও সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাক গলানোর অভিযোগও আনা হয় মস্কোর বিরুদ্ধে।

ইউরোপের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন নির্বাচনের প্রায় আগমুহূর্তে কালিনিনগ্রাদ সীমান্তে ইস্কান্দার মিসাইল স্থাপনের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে একটি ফাটল সৃষ্টি করতে চায় রাশিয়া। তাদের এই ধরনের পদক্ষেপ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে স্নায়বিক চাপের মধ্যে ফেলবে বলেও মনে করা হচ্ছে। সাত বছর ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইস্কান্দার মিসাইল ব্যবহার করে এই ধরনের চাপ সৃষ্টি করছেন।