সাগরে মূত্রপানে বেঁচে আছেন অভিবাসীরা
নৌকায় করে মালয়েশিয়াগামী অভিবাসীরা আন্দামান সাগরে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ এই অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তাঁরা এখন পড়েছেন মারাত্মক সংকটে। দুই মাস ধরে নৌকায় বাস করার পরও কোনো দেশের তীরেই ভিড়তে পারছেন না।
বিবিসি জানিয়েছে, দুর্দশা আর খাবারের অভাব এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, বেঁচে থাকার প্রয়োজনে এখন মূত্রও পান করতে হচ্ছে তাঁদের।
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়ায় পাচার হতে যাওয়া এই মানুষদের অবস্থা সরেজমিনে দেখে এসে এমনটাই জানিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা জনাথন হেড।
জনাথন জানান, থাইল্যান্ড উপকূলের কাছে আন্দামান সাগরে মাছ ধরার একটি ট্রলারে প্রায় সাড়ে ৩০০ অভিবাসীকে এক সপ্তাহ ধরে খাবার ও পানীয়র অভাবে নিজেদের মূত্র পান করতে দেখেছেন তিনি। নারী, পুরুষ, শিশু সবাই সেখানে গাদাগাদি করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। এদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলমান।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, খাবারের অভাবে নৌকাটিতে অন্তত ১০ জন মানুষ মারা গেছে বলেও জানতে পেরেছেন তাদের প্রতিবেদক।
নৌকায় অবস্থান করা মানুষরা জানান, প্রায় দুই মাস ধরে তাঁরা এই ট্রলারে বাস করছেন। কিছুদিন আগে নৌকার চালক এবং কর্মচারীরা ইঞ্জিন বিকল করে পালিয়ে গেলে তারা আরো বিপদে পড়ে যান।
একটি ইঞ্জিনচালিত জলযানে করে ওই ট্রলারটির কাছে যান কয়েকজন সাংবাদিক। সে সময় খাবার ও পানি চেয়ে আকুতি জানাতে থাকেন ট্রলারের মানুষরা।
সাংবাদিকরা দেখতে পান, ট্রলারের লোকজন বোতলে ভরা নিজেদের মূত্র পান করছেন।এমন পরিস্থিতিতে তারা নিজেদের কাছে থাকা পানির বোতলগুলো ট্রলারটিতে ছুড়ে মারেন।
সম্প্রতি মানবপাচার ঠেকাতে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার উপকূলরক্ষীরা শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। ফলে মানবপাচারকারীরা উপকূলের কাছাকাছি গিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে যাওয়া নৌকাগুলো থেকে সরে পড়ছে।তাই অনেক নৌকায় কয়েক হাজার মানুষ দিনের পর দিন সাগরে ভাসছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলছে, এ সংখ্যা আট হাজার বা তার চেয়ে কিছু কমবেশি হতে পারে।এসব নৌকার যাত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশের অনেক নাগরিকও রয়েছেন।