মাটির ওপরে-নিচে আইএসের যুদ্ধ!
ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাছে জিম্মি থাকা ইরাকের মসুল শহর পুনরুদ্ধারে যুদ্ধ করছে ইরাকের সরকার নিয়ন্ত্রিত বাহিনী। তবে এই যুদ্ধ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে তারা। মাটির ভেতর থেকে ভোজবাজির মতো উদয় হয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে আইএস যোদ্ধারা। পাল্টা আক্রমণের আগেই আবার মিলিয়ে যাচ্ছে তারা। ফলে যুদ্ধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ইরাকের সৈন্যরা।
আইএসের খোঁড়া এসব সুড়ঙ্গের সন্ধান করছিলেন ইরাক সরকারের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বললেন, তারা সব জায়গায় ছিল। মাটির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বললেন, এখানে প্রথমে একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। একে একে পাওয়া গেছে মোট ছয়টি সুড়ঙ্গ।
আইএসের হাত থেকে পুনরুদ্ধার হওয়া মসুলের মাটির নিচে মৌচাকের মতো অসংখ্য সুড়ঙ্গ আবিষ্কার করছেন ইরাকের কর্মকর্তারা।
আর সে কারণে তিনদিন ধরে ইরাকের সেনাবাহিনীকে রীতিমতো আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। কেননা কোন সুড়ঙ্গ থেকে যে আইএস যোদ্ধারা বের হবে, আক্রমণ চালিয়ে আবার পালিয়ে যাবে তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা।
ইরাকের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া রাসুল বলেন, গত শুক্র ও শনিবারের লড়াই ছিল ভীষণ ভয়ানক। সেনাবাহিনী যতই মসুলের ভেতরের দিকে প্রবেশ করছে ততই লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যাও।
ইরাকের বিশেষ বাহিনী এখন মসুলের পূর্ব দিকের জেলাগুলোতে যুদ্ধ করছে। সেখানে যুদ্ধরত সেনারা বলছেন, সর্বত্র বিরাজমান সুড়ঙ্গ, সেইসাথে বিভিন্ন ভবনের দেওয়ালের মধ্যে লুকিয়ে থাকা আইএস যোদ্ধারা অতর্কিত যুদ্ধ করছেন। ফলে বেশ মুশকিলে পড়তে হচ্ছে ইরাকি বাহিনীকে। একজন ইরাকি কমান্ডার জানান, তাঁর সাঁজোয়া যানের সামনে বেশ কয়েকজন আইএস যোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন তাঁরা পথের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
একই সঙ্গে দুটি শহরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরাকের সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীর কর্নেল ফালাহ আল ওবায়দি। তিনি বলেন, একটা যুদ্ধ হচ্ছে মাটির ওপরে। আরেকটা হচ্ছে মাটির নিচে। যেখানে লুকিয়ে আছে শত শত আইএস যোদ্ধা।
মসুল শহরের মাটির নিচে কি পরিমাণ সুড়ঙ্গ আছে তার পরিমাণ এখনো অজানা। আইএস যোদ্ধারা একইরকম সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল ফাল্লুজা শহরেও। গত জুন মাসে সেটি পুনরুদ্ধার করে ইরাকি বাহিনী।
কিছু কিছু সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ১০০ গজের বেশি। মাটির নিচের এসব প্যাসেজে রয়েছে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থাও। এসব সুড়ঙ্গের ভেতর অস্ত্র রাখার ঘর, ছোট রান্নাঘর, খাবারের সংরক্ষণাগার এবং বিস্ফোরক মজুদের ব্যবস্থাও দেখতে পেয়েছেন ইরাকের সৈন্যরা।