অভিবাসী সংকট নিরসনে মালয়েশিয়ার দৌড়ঝাঁপ
ভারত মহাসাগরে ভাসমান অভিবাসীদের সংকট নিরসনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার অন্যতম লক্ষ্য মিয়ানমারের সঙ্গে যুৎসই আলোচনা করা। আর এ ব্যাপারে চলতি সপ্তাহে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বসছে মালয়েশিয়া।
মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, প্রয়োজনে আসিয়ানের জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হতে পারে। আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান মালয়েশিয়া। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারও আসিয়ানের সদস্য।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, সাগরপথে পাচার হওয়া এবং ভাসমান মানুষগুলোর অধিকাংশই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। এদের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও আছে। তবে অভিবাসী সংকটের দায়ভার নেবে না বলে জানিয়েছে মিয়ানমার।
দ্য স্টার জানিয়েছে, আজ রোববার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফাহ আমান। বৈঠকটি ছিল পূর্বনির্ধারিত। অর্থাৎ সাগরে ভাসমান অবৈধ অভিবাসনের সাম্প্রতিক সংকটের আগেই বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠক শেষে আনিফাহ আমান বলেন, ‘আসিয়ানের চেয়ারম্যান হিসেবে বিস্তৃত আলোচনা করব, যেন সমস্যাটির সমাধান করা যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাওয়ার আগেই আমি আশা করি সমস্যার সমাধান পেতে মিয়ানমার আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।’
আনিফাহ জানান, তিনি আগামী সোমবার কোটা কিনাবালুতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আগামী বুধবার কুয়ালালামপুরে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
আনিফাহ বলেন, ‘নৌযানে রোহিঙ্গাদের অবস্থার ব্যাপারে আমরা উদ্বিগ্ন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে আমরা এদের সাহায্য করছি। কিন্তু এত বড় দলের শরণার্থী আমরা দেশে নিতে পারব না। অন্যান্য দেশও এদের গ্রহণ করবে না।’
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ গণ-অভিবাসনের জন্য মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকেই দায়ী করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রোববার মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোতে ঠেলে দেওয়ার বদলে মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিজ দেশেই সমস্যার সমাধান করা।’
গত শনিবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সাগরের ভাসমান মানুষের এ পরিস্থিতিকে বলেছেন, ‘মানবিক বিপর্যয়।’ সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নাজিব বলেন, ‘মালয়েশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কিন্তু আমরা সমস্যার উৎস নই।’
গত কয়েক দিনে তিন হাজার ভাসমান অবৈধ অভিবাসীকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডের উপকূলে উদ্ধার করা হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা বলেছে, আন্দামান সাগরসহ ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান এসব মানুষের সংখ্যা আট হাজারের মতো।