১৫ মাসে পাচার লাখ মানুষ, মৃত্যু এক হাজার
গত বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ৮৮ হাজারের বেশি মানুষকে সাগরপথে পাচার করা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সাগরপথে পাচার হয়েছে ২৫ হাজার মানুষ। আর এদের সহ্য করতে হয়েছে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন।
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর), জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএন-ওএইচসিএইচআর), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। সাগরে ভাসমান মানুষের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৫ মাসে সাগরপথে ভিন্ন দেশে যেতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষ। পাচারকারীদের নির্যাতনে ও মারাত্মক দুর্দশায় এসব মানুষ মারা যায় বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এসব মানুষকে কেবল সাদা ভাত খেতে দেওয়া হয়। আর এদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। এ সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে এসব মানুষ। নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে।শিশুদের বাবা ও মা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমনকি এসব নির্যাতন থেকে শিশুরাও রেহাই পায়নি। আর পুরুষদের প্রচুর মারধর করা হয়েছে। ফেলে দেওয়া হয়েছে সাগরে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাগরে ভাসমান এসব নারী, পুরুষ ও শিশু মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে এবং এ মুহূর্তে এসব মানুষের খাবার, পানি ও চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে এসব মানুষকে উদ্ধার করতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এসব দেশের নেতাদের প্রতি অভিবাসীদের জীবন রক্ষা এবং উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, এসব মানুষকে সাগরে ফেরত পাঠানো বন্ধ করা, নৌযান থেকে তীরে নামার ব্যবস্থা করা, এসব মানুষকে আটক বা শাস্তি না দেওয়াসহ মোট নয়টি আহ্বান করা হয়।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের পক্ষে অ্যান্টনিও গুটেরেস, জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের পক্ষে জায়েদ রাআদ আল হুসেইন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষে মহাপরিচালক উইলিয়াম এল সুইং এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি পিটার সাদারল্যান্ডের নাম প্রকাশ করা হয়।