মলদোভায় ইউরোপীয় সম্মেলন শুরু, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা
মলদোভায় ইউরোপিয়ান পলিটিকাল কমিউনিটির (ইপিসি) সম্মেলন শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ জুন) শুরু হওয়া এ সম্মেলনে আলোচনার বিষয় ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান (ইইউ) তো বটেই তার বাইরেও ইউরোপীয় দেশগুলো এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। মোট ৪৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান পৌঁছেছেন ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে মলদোভার বিলাসবহুল মিমি ওয়াইনারি প্রাসাদে।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই উঠে এসেছে ইউক্রেনের প্রসঙ্গ। গত বুধবার (৩১ মে) রাতেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রবল আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। একের পর এক দূরপাল্লার মিসাইল, ড্রোন এবং বিমান হামলা চালানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও ট্রেনে করে মলদোভার সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে তিনি ফের অস্ত্র সহায়তা চেয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া যেদিন চাইবে, সেদিনই যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু রাশিয়া তেমন কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না, বরং রাজধানীসহ সর্বত্র একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ইউক্রেনের আরও অস্ত্র প্রয়োজন।’ ফ্রান্স, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর কাছে তিনি আরও বেশি অস্ত্রের দাবি করেছেন।
একইসঙ্গে এদিন জেলেনস্কি জানান, তার দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগেই ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেওয়ার আলোচনা শুরু করেছিল। তবে ন্যাটোয় শেষপর্যন্ত ইউক্রেন জায়গা করে নিতে পারবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিনের আলোচনায় মলদোভাকেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মলদোভা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রাশিয়া ও বেলারুশ ছাড়া ইউরোপের প্রায় সব দেশই এ দিনের বৈঠকে যোগ দিয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেন, ‘রাশিয়া এখানে নেই। কারণ রাশিয়া নিজেই নিজের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা যুদ্ধ শুরু করেছে।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে গোটা ইউরোপকে সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলন তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেলারুশ রাশিয়ার বন্ধু, তাই তাদেরকেও এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টও ভ্লাদিমির পুতিনের পরম বন্ধু। তবে তাকে এই সম্মেলনে যোগ দিতে দেখা গেছে। যদিও রেড কার্পেটে তার পাশে আর কেউ ছিলেন না।
প্রথম দিনের আলোচনা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই সম্মেলনে যে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না, তা আগেই জানিয়েছিলেন জার্মানি এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান। তাদের বক্তব্য, এই সম্মেলনে সবার অভিমত শোনা হবে। সবার সঙ্গে আলোচনার পরিসর তৈরি করা হবে। এখানে যা আলোচনা হবে, পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তা সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ইউরোপের অধিকাংশ দেশগুলোকে একটি ছাতার তলায় আনা। এ দিনের বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আরও দেশকে ঢোকানোর বিষয়টি ফের আলোচনায় এসেছে।