অস্ত্র নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে মস্কো যাবেন কিম

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন। এএফপির ফাইল ছবি

চলতি মাসেই রাশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন। এই সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। দুদেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে অস্ত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তার বিষয়ে কথা হতে পারে পুতিন-কিম বৈঠকে। তবে কোথায়, কখন এই বৈঠক হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

এ বিষয়ে মস্কো ও পিয়ংইয়ং কর্তৃপক্ষের কাছে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি।

একটি সূত্র মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে জানায়, সাঁজোয়া ট্রেনে করে মস্কো সফরে যেতে পারেন কিম।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউস থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র চুক্তির সম্ভাব্য অগ্রগতি হয়েছে। এরপরেই কিমের মস্কো সফরের বিষয়টি সামনে এলো।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। ওই সফরে পিয়ংইয়ংকে মস্কোর কাছে কামান-গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

কোভিডের বিধিনিষেধ তোলার পর প্রথমবারের মতো বাইরের দেশের কোনো ব্যক্তি হিসেবে পিয়ংইয়ং যান শোইগু। ওই সফরে কিম জং উনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওই সময়ের কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করা হয়। একটি ছবিতে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা ও শোইগুর পেছনে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেখা যায়।

জন কিরবি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে একাধিক বার চিঠি লেনদেন করেছেন পুতিন ও কিম।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা উত্তর কোরিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র আলোচনা বন্ধ এবং তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার জন্য আহ্বান জানাই।’ 

হুঁশিয়ারি দিয়ে জন কিরবি বলেন, ‘যদি রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করা হয়, তাহলে আমরা পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এমনকি, তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হতে পারে।’

বিবিসি জানিয়েছে, মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র চুক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন সিউল ও ওয়াশিংটন। এর ফলে এশিয়ার দুদেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শোইগু রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো যৌথ নৌ মহড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিবিসি বলছে, মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, এখন যদি মস্কোর কাছে পিয়ংইয়ং অস্ত্র বিক্রি বা সরবরাহ করে সামনের দিকে বিষয়টি নৈমিত্তিকে পরিণত হবে। উত্তর কোরিয়ার প্রয়োজনের সময় রাশিয়াও তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে পারে। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, পুতিন কিমকে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে সাহায্য করতে পারে। উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারেন তারা।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের বন্দর শহর ভ্লাদিভোস্টকে কিম-পুতিনের বৈঠক হতে পারে। গণমাধ্যমটির কূটনৈতিক সংবাদদাতা এডওয়ার্ড অং বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের একটি দল গত মাসের শেষের দিকে ভ্লাদিভোস্টক ও মস্কো ভ্রমণ করেছিল। কর্মকর্তাদের দলে পিইংইংয়ের শীর্ষ নেতার প্রোটোকল অফিসারও ছিল।’

নিউইয়র্ক টাইমসের এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘স্যাটেলাইট ও পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন প্রোগ্রামের জন্য মস্কোর কাছ থেকে উন্নত প্রযুক্তি চায় পিয়ংইয়ং। পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশটি রাশিয়ার কাছে খাদ্য সহায়তাও চাচ্ছে।’